এই সময়: আজ, মঙ্গলবার রাজ্যের ৪২ লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনায় ‘নন্দীগ্রাম’ বিতর্কের পুনরাবৃত্তি চায় না নির্বাচন কমিশন। সোমবার গণনা কেন্দ্রের প্রস্তুতি নিয়ে ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার, পুলিশ সুপার এবং কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন কমিশন এবিষয়ে সব পক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছে। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার বিশেষ বার্তা দেন।কমিশনের সাফ কথা, গণনা চলাকালীন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। রাখতে হবে বাড়তি জেনারেটার। যাতে গণনা কেন্দ্রে কোনওভাবেই এক মুহূর্তের জন্য অন্ধকার না হয়। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে গণনা চলাকালীন লোডশেডিং-এর ঘটনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়৷

ওই কেন্দ্রে প্রার্থী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী৷ বিজয়ী প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হয় শুভেন্দুর নাম৷ ওই ভোটের ফলাফল নিয়ে এখনও আদালতে মামলা চলছে৷ এদিনের বৈঠকে কমিশন কাউন্টিং এজেন্টদের পরিবার নিরাপত্তা চাইলে তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অনেক জায়গায় বিরোধী দলের কাউন্টিং এজেন্ট হওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব ক্ষেত্রে সব দলের কাউন্টিং এজেন্টরাই যাতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা পান তার ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে।

অস্থায়ী কর্মীতে আপত্তি
ভোট গণনার কাজে চুক্তিভিত্তিক কিংবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে কমিশনের কড়া বিধিনিষেধ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, অঙ্গনওয়ারি কর্মী, প্যারাটিচার, সিভিক ভলান্টিয়ারদের গণনার কাজে কোনও ভাবেই নিয়োগ করা যাবে না।

কমিশনের গাইডলাইন মেনেই গণনার কাজে কর্মী নিয়োগ করতে হবে। যে সব জায়গায় অস্থায়ী কর্মীদের কাজে লাগানো হবে, সেখান থেকে তাঁরা যাতে গণনা টেবিলের কাছে পৌঁছতে না পারে, তা সুনিশ্চিত করতে হবে। হাওড়ার বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তীর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।

এই একই দাবি নিয়ে এদিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া। পরে তিনি বলেন, ‘গণনার কাজে ক্যাজুয়াল স্টাফদের নেওয়া যায় না। তা সত্ত্বেও ডিএম’রা সেটা মানছেন না।’

বিজেপি’র পাশাপাশি বামেদের তরফেও একই দাবি জানানো হয়েছে। এদিন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে যান বাম প্রতিনিধি দল। সিইও অফিস থেকে বেরিয়ে মহম্মদ সেলিম সাংবাদিকদের জানান, গণনার কাজ যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে হয় এবং ভুয়ো স্টাফ না ঢোকে, সেটা কমিশনকে দেখতে হবে। অনেক সময়ে এআরও অফিস থেকে জাল কার্ড ইস্যু করা হয় এবং সেটা দেখিয়ে অনেকে গণনা কেন্দ্রে ঢুকে পড়েন।

তাঁর দাবি, যাঁরা গণনা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকবেন তাঁদের আইকার্ড ভালো করে চেক করতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। একই দাবি পেশ করা হয়েছে কংগ্রেসের তরফেও।

West Bengal Lok Sabha Election : ‘গণনা টেবিলের ধারে-কাছে যেতে পারবেন না অস্থায়ী কর্মীরা’, কমিশনকে নির্দেশ হাইকোর্টের

রাজভবনে পিস-রুমভোটের দিনগুলিতে মানুষের অভিযোগ শোনার জন্য রাজভবনে ‘পিস রুম’ খোলা হয়েছিল। আজ, গণনার দিনও পিস রুম খোলা থাকবে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এক ভিডিয়ো বার্তায় জানিয়েছেন, গণনায় কারচুপি হলে রাজভবনের পিস রুমে অভিযোগ জানানো যাবে। তিনি বলেন, ‘ভোটের ফল যাই হোক না কেন, দেশবাসীর রায়কে আমাদের সবার সম্মান জানানো উচিত। এর সুযোগ নিয়ে কেউ গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করছে কি না, তার উপর আমাদের নজর থাকবে। কোথাও হিংসার ঘটনা নজরে এলে আপনারা রাজভবনের পিস রুমে জানাতে পারেন। যে কোনও মূল্যে হিংসা রুখতে রাজভবন প্রস্তুত আছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version