এই সময়: তাঁর প্রশাসনিক বৈঠক মানে ‘ওপেন টু অল’। ভোট পরবর্তী রাজ্যওয়ারি প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী কার্যত বজ্র আঁটুনির মধ্যেই করলেন। মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরের প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপে পড়লেন একাধিক দপ্তরের আধিকারিক-মন্ত্রী। রাস্তায় লরি থেকে টাকা আদায়, এমনকী, ভোটের সময়ে ফেক ভিডিয়ো আটকাতে না পারা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।কয়েকটি দপ্তরের কাজে যে তিনি সন্তুষ্ট নন, তাও স্পষ্ট করে দেন এদিন। খুব শিগগির জেলাগুলিতে রিভিউ মিটিং করবেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দপ্তরগুলির কাজের পর্যালোচনা আরও নিবিড় ভাবে করা হবে বলে মত মমতার। এদিনের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, আবাস যোজনার উপভোক্তাদের নতুন করে যাচাই করে তালিকা তৈরি করা হবে। সেই তালিকা ধরে টাকা ডিসেম্বরেই দেবে রাজ্য সরকার।

এদিনের বৈঠক সরাসরি সম্প্রচারিত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর সোশ্যাল মিডিয়াতেও বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং হয়নি। প্রবেশাধিকার ছিল না সংবাদমাধ্যমেরও। ভোটের সময়ে ছড়িয়ে পড়া ফেক ভিডিয়ো, অডিয়ো ক্লিপের জন্য বেশ কয়েকবার বিপাকে পড়তে হয় রাজ্যের শাসক দলকে। পরে দেখা যায় যে, সেগুলি ফেক।

সূত্রের খবর, এদিন বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ তুলে তিনি জানতে চান, সংশ্লিষ্ট দপ্তর কেন আরও সক্রিয় হয়নি? আগামী দিনে এই বিষয়ে দপ্তরকে আরও সজাগ থাকার পরামর্শ দেন তিনি। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী তোপের মুখে পড়েন একাধিক জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারেরা। জানতে চান, ওভারলোডিং নিয়ে এত অভিযোগ কেন উঠছে সর্বত্র? তাঁর কাছে সরাসরি বেশ কিছু অভিযোগ আসছে বলেও জানান তিনি।

এর আগেও এই বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেও কেন তা বন্ধ হচ্ছে না, তা এদিন ফের জানতে চান তিনি। স্কিল ডেভেলপমেন্টের কাজ নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠকে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘স্কিল ডেভেলপমেন্টের কাজ কেন ভালো হচ্ছে না?’ তবে শুধুমাত্র এই দপ্তরই নয়, আরও কয়েকটি দপ্তরের কাজ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। একাধিক সচিব এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়েন।

মমতা বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত নজরদারি করছি আপনাদের কাজের। ভবিষ্যতে এটা মাথায় রেখেই কাজ করবেন।’ মুখ‍্যমন্ত্রী এদিনের বৈঠকে রাজ্যের পরিকাঠামো উন্নয়নে চালু প্রকল্পগুলি দ্রুত রূপায়নের পাশাপাশি নতুন প্রকল্পের রূপরেখা তৈরির ওপরেও গুরুত্ব দেন। সাফ বলেন, ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ফেলে রাখা যাবে না। এটা আমরা ভোটে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। তাড়াতাড়ি কাজ করতে হবে।’ মুড়িগঙ্গার ওপরে সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিয়েও এগোনোর কথা বলেন তিনি।

প্রাপ্য আদায়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ত্রিমুখী লড়াইয়ের ছক রাজ্যের

কেন্দ্রের না দেওয়া আবাস যোজনার টাকা যে রাজ্য দেবে, ভোট প্রচারেই সেই আশ্বাস দিয়েছিলেন মমতা এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতা বলেন, ‘আবাসের উপভোক্তাদের তালিকা ফের যাচাই করতে হবে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মজুরির টাকা দেওয়ার আগে প্রাপকদের তালিকা যে ভাবে তৈরি করা হয়েছিল, সেভাবেই সরকারি কর্মীদের দিয়ে ওই তালিকা তৈরি করতে হবে। আগামী ডিসেম্বরে ওই প্রকল্পের টাকা দেওয়া হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version