লোহার বাসরঘরে সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়েছিল লখিন্দরের। প্রাণ ফিরিয়ে আনার জন্য স্বামীর দেহ ভেলায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন বেহুলা। পৌরাণিক সেই কাহিনী অন্ধ বিশ্বাসের মতো সমাজের একাংশের মানুষের মনে আজও গেঁথে রয়েছে। আর তার প্রমাণ ফের একবার পাওয়া গেল মুর্শিদাবাদের সুতিতে। যেখানে সাপে কাটা বছর দশেকের এক কিশোরীকে ভাসিয়ে দেওয়া হল নদীতে।জানা গিয়েছে, সুতি থানার কানাইঘাট এলাকার বাসিন্দা বছর দশেকের কিশোরী অমৃতা মণ্ডলকে সাপে কামড়ায়। কিন্তু পরিবারের লোকজন প্রথমেই ওই কিশোরীকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। দীর্ঘক্ষণ চলে ওঝার ঝাড়ফুঁক, কেরামতি। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কোনও হয়নি। বরং আরও নেতিয়ে পড়ে অমৃতা। এরপর পরিবারের লোকজন অমৃতাকে নিয়ে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসাপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরিবারের দাবি, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হয় অমৃতার। তাই মাঝ পথ থেকেই তার দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। অভিযোগ, এরপর কানাইঘাটে সুসজ্জিত ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয় অমৃতার দেহ। আর নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখল হাজার হাজার মানুষ। অমৃতার পরিবাবের বিশ্বাস, বেঁচে ফিরে আসবে তাদের মেয়ে। যদিও এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমর সামনে মুখ খুলতে চাননি অমৃতার পরিবারের কেউই।
এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়েও সমাজের একাংশের মনে কী ভাবে এই ধরনের অন্ধ বিশ্বাস রয়ে গিয়েছে, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্নমহলে। এই বিষয়ে সুতি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অরূপ সাহা বলেন, ‘এরকম ঘটনা আমার জানা নেই। তবে বারবার প্রচার করা হয়েছে, সাপে কাটলে ওঝা নয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়েও সমাজের একাংশের মনে কী ভাবে এই ধরনের অন্ধ বিশ্বাস রয়ে গিয়েছে, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্নমহলে। এই বিষয়ে সুতি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অরূপ সাহা বলেন, ‘এরকম ঘটনা আমার জানা নেই। তবে বারবার প্রচার করা হয়েছে, সাপে কাটলে ওঝা নয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এমনই একটি ঘটনা ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের সন্দেশখালি থানা এলাকায়। খুলনা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা বছর পয়তাল্লিশের স্বপন মৃধা নামে এক ব্যক্তি সাপের কামড়ে মারা গিয়েছিলেন। তাঁকেও স্থানীয় একটি নদীতে কলার ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনাকে ঘিরেও সেই সময় শোরগোল পড়ে যায় গোটা এলাকায়। আবার ওই বছরই জুন মাসে এমন এক ঘটনা ঘটে যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনে। সেখানেও সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় শ্রাবণী মালাকার নামে এক নাবালিকার। চিকিৎসকরা অ্যান্টিভেনাম ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেও বাঁচান সম্ভব হয়নি ওই নাবালিকাকে। সেই নাবালিকার দেহও বাড়িতে ফিরিয়ে আনার পর ভাসিয়ে দেওয়া হয় নদীতে।