সেদিনের সকাল জীবনভর ভোলার নয়। ভয়াবহ স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে হুগলির দুই যুবককে। অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ছিলেন তাঁরাও। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ভর্তি ছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন তন্ময় ঘোষ ও সৌনক সাহা। তবে, মনের মধ্যে সেদিনের আতঙ্কটা রয়েই গিয়েছে। শোনালেন তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।তন্ময় ঘোষ ও সৌনক সাহা আজ সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ধনিয়াখালির বাড়িতে ফেরেন। তন্ময় জানান, সেদিন পেছন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে মালগাড়ির সজোরে ধাক্কা মার। প্রথমে লাগেজ ভ্যানে ধাক্কা লাগে। তৃতীয় নম্বর জেনারেল কামরায় তাঁরা ছিলেন। হঠাৎই জোরে একটি ঝাঁকুনি দেয়। তারপর ট্রেনটি লাইন থেকে নেমে যায়। তারপর আর কিছু বুঝতে ওঠা যায়নি।

তন্ময় ঘোষ ওই অবস্থায় পাঁচজনকে ওই কামরা থেকে উদ্ধার করেন। তাঁর সঙ্গে ছিল বন্ধু সৌনক সাহা। তাঁকে উদ্ধার করে একটি জায়গায় বসিয়ে রাখা হয়। ততক্ষণে রাঙাপানি এলাকার স্থানীয় মানুষরা খবর পান। সেই সময় তাঁরা নামাজ পড়তে ব্যস্ত। খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা ছুটে এসে উদ্ধার কার্যে হাত লাগায়। দুর্ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকেই উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হাড় কাঁপানো ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতা কখনোই ভুলতে পারবো না বলে মত দুজনেরই। দুজনের কাঁধে, হাতে এবং পায়ে গুরুতর চোট লাগে।

Kanchanjunga Express: ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা! মালগাড়ির ধাক্কায় ইঞ্জিনের মাথায় কাঞ্চনজঙ্ঘার কামরা!

বাড়িতে ফেরার পর আজ দুপুর দুটো নাগাদ ধনিয়াখালিতে মিশ্র তলায় তাঁদের বাড়িতে দেখা করতে আসেন স্থানীয় বিধায়ক অসীমা পাত্র। ঘটনা ঘটার পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। সেখানে জানতে পারেন যে, হুগলির ধনিয়াখালির দু’জন বাসিন্দা আছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ধনিয়াখালীর বিধায়ক অসীমা পাত্রকে ফোন করে বিষয়টি জানান।

ইদে বাড়ি ফেরা হল না, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল গৃহবধূর
মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পেয়েই বিধায়ক অসীমা পাত্র সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন দু’জনের বাড়িতে। সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা পরিবারের পাশে দাঁড়ান। ধনিয়াখালি সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক-এর তরফ থেকে একটি গাড়িও পাঠানো হয়। সেই গাড়িতে করেই তন্ময় ঘোষ ও সৌনক সাহার বাড়ির লোক উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পরে ধনিয়াখালির সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বাড়িতে এসে দেখাও করে গিয়েছেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version