এই সময়, আসানসোল: দীর্ঘ সওয়াল-জবাব ও টানাপড়েনের পর বুধবার সন্ধ্যায় বিহারের গ্যাংস্টার সুবোধ সিংকে নিয়ে গ্রিন করিডর করে আসানসোল থেকে কলকাতার ভবানী ভবনের পথে রওনা দেন সিআইডি-র অফিসাররা। কড়া সুরক্ষাবলয়ে মোড়া কনভয়ের মাঝে সবুজ প্রিজন ভ্যানে ছিল সুবোধ। তার সামনে পিছনে পুলিশ এবং সিআইডির গাড়ি। রাখা হয়েছিল র‍্যাফ।রাজ্যের একাধিক জায়গায় অপরাধ সংগঠনে নাম জড়িয়েছে সুবোধের। তার মধ্যে ব্যারাকপুরে ব্যবসায়ীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ও হুমকি, রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতি একেবারে সাম্প্রতিক ঘটনা। তবে ২০২২ সালে রানিগঞ্জের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় এদিন আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছিল সুবোধকে।

আদালতে সওয়াল-জবাবে নানা নাটকীয়তার পরে সুবোধকে ১৪ দিনের হেফাজতে নেয় সিআইডি। গত সোমবার সিআইডির এক অফিসারকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল সুবোধের বিরুদ্ধে। এদিন রায়দানের পরে সুবোধকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময়ে সেই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুবোধ বলে, ‘আমি সিআইডিকে কোনও হুমকি দিইনি। আমাকেই সিআইডি অফিসাররা গুলি করার হুমকি দিয়েছেন। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ৬ বছর ধরে আমি জেলে আছি। যা প্রমাণ করার তা পুলিশকে করতে হবে।’

ব্যারাকপুরের ব্যবসায়ীকে বেউর জেল থেকে ফোনে হুমকি, মণীশ শুক্লাকে খুনের পরিকল্পনা ও ব্যারাকপুরে বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংকে সে চেনে না বলে দাবি করে। এদিন আসানসোল জেল থেকে এই গ্যাংস্টারকে আদালতে আনার আগে গোটা এলাকা কার্যত দুর্গে পরিণত হয়। রাস্তায় ব্যারিকেডের সঙ্গে মোতায়েন করা হয় প্রচুর সংখ্যায় পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স। আদালতে হাজির ছিলেন মামলার তদন্তকারী অফিসার দিগন্ত বিশ্বাস, সিআইডি-র ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসাররা।

বেলা ১২টায় আদালতে অতিরিক্ত জেলা জজ (২) শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে পেশ করা হয় সুবোধকে। সরকারি আইনজীবী প্রশান্ত ঘোষ সুবোধকে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেন। তবে সুবোধের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু ও সোমনাথ চট্টরাজ দাবি করেন, এই মামলা শোনার এক্তিয়ার নেই অতিরিক্ত জেলা জজের। তাঁদের আরও দাবি, ২০১৮ সাল থেকে সুবোধ সিং বিহারের বেউর জেলে রয়েছে।

‘দেখ লেঙ্গে’, সিআইডি অফিসারদের হুমকি গ্যাংস্টার সুবোধের

তাহলে কী করে রানিগঞ্জের ওই ঘটনায় সে মাস্টারমাইন্ড হতে পারে?
এর পর মামলা স্থানান্তরিত হয় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) অমৃতা চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে। বিকেলে সেখানে নতুন করে শুনানি শুরু হয়। এখানেও সিআইডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুবোধ সিংয়ের আইনজীবীরা। সিআইডি-র ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদনের বিরোধিতাও করেন তাঁরা। আইনজীবী শেখর কুণ্ডু আদালতে জানান, সুবোধ সিংকে যদি সিআইডি হেফাজত দেওয়া হয় তাহলে জেরার সময়ে যেন ভিডিয়োগ্রাফি ও অডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়।

যদিও সরকারি আইনজীবী এই দাবি মানতে চাননি। সওয়াল-জবাব শেষে রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ বিচারক ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজত মঞ্জুর করেন। সুবোধের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ বলেন, ‘একাধিক বিষয়ে আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। অর্ডারের কপি এখনও দেখিনি। দেখার পরে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার থাকলে নেওয়া হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version