Darjeeling Tour,শৈলশহরে বিপর্যয়ের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের, দার্জিলিঙে বন্ধ রক গার্ডেন ও গঙ্গামায়া পার্ক – rock garden and ganga maya park closed due to disaster in darjeeling


এই সময়, শিলিগুড়ি: ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে দার্জিলিং। যথেচ্ছ কংক্রিটের জঙ্গল তৈরির মাশুল এ বার দিতে হতে পারে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় শৈলশহরকে। গত শুক্রবার পর পর দু’টি ধস নামার ঘটনা ঘটে দার্জিলিংয়ে। প্রথমটি দার্জিলিং রেল স্টেশনের পাশে। অন্যটি, লেবং কার্ট রোডে। প্রাণহানির ঘটনা না-ঘটলেও যে ভাবে দার্জিলিংয়ে একের পর এক বহুতল তৈরি হয়েছে তাতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।এমন আশঙ্কার কারণ, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ জুড়ে ভারী বৃষ্টি চললেও দার্জিলিংয়ে দু’একদিনের বেশি ভারী বৃষ্টিপাত হয়নি। তার পরেও কেন ধস নামল তা নিয়েই তৈরি হয়েছে কৌতূহল। একের পর এক বহুতলের চাপেই এমন ঘটনা কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অবিলম্বে, দার্জিলিংয়ে বহুতল নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি যে সমস্ত বহুতল ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে সেগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক।

যদিও বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট ভূতাত্ত্বিক সুবীর সরকার বলেন, ‘ধস নিয়ন্ত্রণ করতে দার্জিলিংয়ে বহুতল নির্মাণ বন্ধের জন্য বহু বার বহু কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অথচ পাহাড়ে এই কাজটিকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।’

শনিবারই জিটিএর পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে দু’টি পার্কই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। জিটিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টির জেরে ইতিমধ্যেই বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দার্জিলিংয়ের দুটি পর্যটন কেন্দ্র রক গার্ডেন এবং গঙ্গামায়া পার্কে। জিটিএর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মূলত পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই পার্ক দুটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু ধস ঠেকাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে জিটিএর তরফে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি। জিটিএর ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, দার্জিলিং পুরসভাকে প্লাস্টিক ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি

শৈলশহরের নিকাশি নালাগুলি নিয়মিত ভাবে পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার যে দুটি ধস নামার ঘটনা ঘটে, সেখানে কিন্তু নিকাশি নালার অস্তিত্ব নেই। বরং রেল স্টেশনের কাছে যে ধস নেমেছে তাতে লক্ষ্য করা গিয়েছে, তিনটি পানীয় জলের ট্যাঙ্কের ঠিক নীচ থেকে ধস নামে। মূলত বৃষ্টির জল পাহাড়ে ফাটল বেয়ে নীচে জমা হতে হতে একটা সময়ে ফেটে বার হয়ে আসে। তখনই ধস নামে।

এ ক্ষেত্রে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক লিক করে এমন ঘটনা ঘটল কি না, সেই প্রশ্ন অনেকের মনে উঁকি দিয়েছে। রেল স্টেশন লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা রোশন থাপা বলেন, ‘পানীয় জলের ট্যাঙ্ক লিক করে জমা জলের জন্য ধস নেমেছে কি না বলা কঠিন। বিশেষজ্ঞরা সেটা বলতে পারবেন। তবে বহুতলের চাপে ধস নেমেছে বলেই আমার মনে হয়।’

বহুতল নিয়ে এই ক্ষোভ দার্জিলিংয়ের সর্বত্র। জাকির হোসেন রোডের বাসিন্দা প্রতাপ রাই বলেন, ‘বহুতলের চাপে দার্জিলিংয়ের এখন এমন অবস্থা যে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে ম্যালে যেতে হয়। আগে বাড়ির বারান্দা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেতাম। কেন দার্জিলিং শহরটাকে এমন কংক্রিটের জঙ্গল করা হলো সেটা নিয়ে সকলের ভাবা উচিত।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *