এই সময়, কালনা: চোখের সামনে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে সহকর্মীর। পড়ে রয়েছে তাঁর দেহ। তার পরেও কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য হলেন ঠিকাশ্রমিকরা। কারণ তাঁরা ব্যস্ত ছিলেন লাইন রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কাজে। কিন্তু, সেই সহকর্মীর দেহ লাইনের পাশে পড়ে রইল ৫ ঘণ্টা! বৃহস্পতিবার কালনার এই ঘটনায় রেলের নিরাপত্তা, গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি মনে করিয়ে দিয়েছে ‘দ্য শো মাস্ট গো অন’ প্রবাদের কথা।এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে হাওড়া-কাটোয়া লাইনের সমুদ্রগড় ও কালীনগর স্টেশনের মাঝে। সে সময়ে নিয়মমাফিক রেললাইনে কাজ করছিলেন কয়েকজন ঠিকাশ্রমিক। ট্রেন আসার শব্দ শুনে অন্যরা নিরাপদ দূরত্বে সরে গেলেও ঠিকাশ্রমিক অভিজিৎ টুডু (২৬) পারেননি। ডাউন মালদহ-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় তাঁর।

কালনার নান্দাইয়ের দুর্গাপুর এলাকার ওই যুবকের নিথর দেহ পড়ে থাকে রেললাইনের পাশে। এক-দু’ঘণ্টা নয়, প্রায় ৫ ঘণ্টা পরে বিকেল ৩টে নাগাদ তাঁর দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় কালনা জিআরপি। এই দীর্ঘ সময় মৃত সহকর্মীর দেহ পাশে পড়ে থাকতে দেখেছেন অন্য ঠিকাশ্রমিকরা কিন্তু, কাজ চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা।

এই ঘটনায় রেলের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। রেললাইনে কর্মরত ঠিকাশ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছে। শ্রমিক সংগঠন সিটুর রেলের কন্ট্রাক্টর লেবার ইউনিয়নের কাটোয়া শাখার সম্পাদক দানেশ শেখ বলেন, ‘রেলের রক্ষণাবেক্ষণের প্রায় সব কাজ ঠিকাশ্রমিকরাই করেন। বর্ধমানের এক ঠিকাদারের অধীনে ওই শ্রমিক কাজ করছিলেন। তাঁর মৃত্যুর দায় রেলের উপরও বর্তায়। ওই যুবকের স্ত্রী ও তিন মাসের সন্তান রয়েছে। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে দেখছি ঠিক কী হয়েছিল। খতিয়ে দেখে নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।’

সেই বিভীষিকাময় বালেশ্বরের বাহানাগা! পুরী-হাওড়া এক্সপ্রেসের চাকায় পিষে মৃত ২
এলাকার বাসিন্দা সুজিত মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, ‘একটি দুর্ঘটনা ঘটল সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ। দেহ পড়ে রইল বেলা ৩টে পর্যন্ত। ওই রেললাইন পার করে মহিলারা গঙ্গাস্নান করতে যান। তাঁরা আতঙ্কে যেতেই পারেননি।’ যদিও কালনা জিআরপি-র ওসি রফিকুল ইসলামের বক্তব্য, ‘প্রক্রিয়া মেনে ঠিক সময়েই দেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version