‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ বন্ধ কর’, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যে শোরগোল।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’ স্লোগান তুলেছিলেন। কিন্তু, বুধবার রাজ্য বিজেপির বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠকে সেই স্লোগান নিয়েই ‘বেফাঁস’ শুভেন্দু। শুধু তাই নয়, ‘নো নিড ফর সংখ্যালঘু মোর্চা’, এই মন্তব্যও শোনা গেল বঙ্গ বিজেপির এই নেতার কণ্ঠে। শুভেন্দুর এই মন্তব্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনেই আসে। শুভেন্দুর এই মন্তব্যেই বঙ্গ রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে যায়।

যদিও পরে নিজের মন্তব্যের সাফাই দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। বিজেপির তরফেও একটি সাংবাদিক বৈঠক করে দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু, শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক থিতু হচ্ছে না।

২০১৪ সালেই সালে ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’ স্লোগান তুলেছিলেন মোদী। সমস্ত শ্রেণি, সম্প্রদায়কে এক সুতোয় বাঁধার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। লাভও পেয়েছিলেন ভোটবাক্সে। ১০ বছর পরেও এই স্লোগান নিয়ে বিজেপির আবেগে সামান্যতম টোলও পড়েনি বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের একাংশের।

বুধবার সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেই স্লোগানের প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ আর বলব না।’ তাঁর সংযোজন, ‘বলব যো হামারে সাথ, হাম উনকা সাথ। সব কা সাথ সবকা বিকাশ বন্ধ করো। নো নিড সংখ্যালঘু মোর্চা (সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজন নেই)।’ সেই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ শীর্ষ নেতারা।

শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের পরই নিন্দার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে। শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন বলেন, ‘বিজেপির আসল চেহারা প্রকাশ্যে এসেছে। আমরা বারবার বলি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বাংলার ১১ কোটি মানুষের মুখ্যমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী শুধুমাত্র বিজেপির প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি স্বার্থপর। মানুষ ভোটবাক্সে যোগ্য জবাব দিয়েছে।’

এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যাও করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘আমি বিজেপির গ্রাউন্ডে কাজ করা কর্মী হিসেবে এটাই বলতে চেয়েছি, বাংলায় শুধুমাত্র সনাতনী হিন্দুরাই বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। সংখ্যালঘু বিশেষ করে মুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দেয়নি। ১০০ জনের মধ্যে ৯১ জন ২০২১ সালে ভোট দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। এবার ৯৫ শতাংশ মুসলিম তাদের ভোট দিয়েছে। তাই আমি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই মন্তব্য করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর সঙ্গে ভারত সরকারের উন্নয়নের কাজ বা প্রধানমন্ত্রী স্লোগান সব কা সাথ সব কা বিকাশের কোনও সম্পর্ক নেই। এটি রাজনৈতিক মঞ্চ ছিল। আমি বলেছি বিজেপির রাজনৈতিকভাবে তাঁদের সঙ্গে থাকা উচিত যাঁরা আমাদের সঙ্গে আছে।’

কিন্তু, শুভেন্দুর ব্যাখ্যায় বিতর্ক থামেনি। এরপরেই ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এ নামে বঙ্গ বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয়তাবাদী সমস্ত মুসলিমের পক্ষে। কিন্তু, যারা ‘নাপাক’ (অপবিত্র) বলে এই দেশ ছেড়ে একসময় চলে গিয়েছিল এবং এখন ফিরে আসছে, বিনা যুদ্ধে ভারত দখলের চক্রান্ত করছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে।’ এদিকে সংখ্যালঘু মোর্চাও অপ্রয়োজনীয় বলে দাবি করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রকাশ্যে তাঁর এই মন্তব্যে অসন্তোষ দলের অন্দরেই।

বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি চার্লস নন্দী বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য দলের বার্তা নয়। দলের দর্শন একান্ত মানববাদী।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version