এই সময়: জ্বর তো আছেই। সঙ্গে যদি পেট খারাপ, কালো পায়খানা কিংবা পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ার অনুভূতি থাকে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। করতে হবে ডেঙ্গি টেস্ট। কেননা, নিত্যনতুন উপসর্গ নিয়ে হাজির হচ্ছে ডেঙ্গি।ক্যালেন্ডারের নিরিখে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ডেঙ্গির মরশুম। স্বাস্থ্যকর্তারা লক্ষ্য করেছেন, নতুন ধরনের নানা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে অনেকের ক্ষেত্রে। কেউ কেউ সিভিয়ার ডেঙ্গিতেও আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই নতুন উপসর্গ চেনাতে সরকারি চিকিৎসকদের নিয়ে একটি অনলাইন কর্মশালা আয়োজন করেছিল স্বাস্থ্য দপ্তর।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন মেডিসিন ও মাইক্রোবায়োলজির বর্ষীয়ান শিক্ষক-চিকিৎসকরা। সরকারি চিকিৎসকদের সেখানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শেখানো হয়, কোন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি টেস্ট করতে হবে এবং রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে সঠিক চিকিৎসার দিশা মিলতে পারে কোন পথে।

নতুন কোন উপসর্গের কথা তুলে ধরছেন বিশেষজ্ঞরা? পেট খারাপ ও মৃদু জ্বরের উপসর্গ দেখলে ডেঙ্গির এনএস-১ কিংবা আইজিএম এলাইজ়া টেস্ট লিখতে হবে প্রেসক্রিপশনে। তাঁদের মনে করিয়ে দিতে বলা হয়েছে যে, কোনও রোগী যদি পেট ব্যথা কিংবা ডায়েরিয়ার উপসর্গ নিয়ে আসেন, তা হলে তাঁর জ্বর হয়েছিল কিনা, তা খোঁজ নিতে হবে।

এমনকী, জ্বর জ্বর ভাব থাকলেও ডেঙ্গি টেস্টের কথা ভাবতে হবে। পরীক্ষা করাতে হবে যদি কারও মাড়ি থেকে সামান্যতম রক্তক্ষরণ হয়, কিংবা কালচে পায়খানা হয়, তখনও। জ্বরের সঙ্গে গায়ে র‍্যাশ থাকলেও ডেঙ্গি টেস্ট করার কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মশাবাহিত রোগ বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী অবশ্য বলছেন, ‘এমন উপসর্গ আদৌ নতুন নয়। আগেও বহু দেখেছি। ডেঙ্গি সংক্রমণর ক্ষেত্রে উপসর্গের বিস্তারিত তালিকার মধ্যে বরাবরই পেট খারাপ এবং মৃদু রক্তক্ষরণকে রাখা হয়।’ স্বাস্থ্যকর্তারা যদিও জানাচ্ছেন, এগুলো ডেঙ্গির অন্যতম উপসর্গ হলেও তার নজির খুব একটা দেখা যায় না।

কিন্তু চলতি মরশুমে এমন নজির অনেকগুলি দেখা যাচ্ছে। সে জন্যই বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। কেননা, রোজকার রোগী দেখার অভ্যাসের মধ্যে ডেঙ্গির চালু উপসর্গগুলির কথাই মাথায় থাকে। তুলনায় কম গুরুত্ব দেওয়া হয় অপ্রচলিত উপসর্গগুলিকে।

চাঁদিপুরা ভাইরাসের দাপট গুজরাটে, সতর্কতা বাংলায়

মাইক্রোবায়োলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সৌগত ঘোষ বলেন, ‘ডেঙ্গি সংক্রমণের চরিত্র বেশ কয়েক বছর ধরেই একটু একটু করে বদলাচ্ছে। গত বছরেও মৃদু জ্বর অথবা একেবারে জ্বর না-থাকা রোগীদের শরীরেও ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। আর কোনও উপসর্গ না থাকলেও দেখা যাচ্ছিল, কারও কারও প্লেটলেটস-সহ অন্যান্য রক্ত উপাদানের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাচ্ছে।’

তিনি জানান, এমন রোগীর সংখ্যা এ বছরেও দেখা যাচ্ছে ভালো রকম। তাই সাবধান হওয়াই ভালো। কেননা, এখনও পর্যন্ত এ বছরের সংক্রমণের গ্রাফ (আক্রান্ত ১৬০০-র বেশি) ২০২৩ সালের তুলনায় সামান্য ভালো হলেও, সতর্ক থাকতে চাইছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version