পাশাপাশি মেয়রের হুঁশিয়ারি, বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেয়েও যদি ইঞ্জিনিয়াররা তাঁদের দায়িত্ব পালন না করেন, তা হলে তাঁদেরও শাস্তি পেতে হবে। বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা না নিলে সংশ্লিষ্ট পুর আধিকারিককে সাসপেন্ড করার নির্দেশও দিয়েছেন মেয়র। ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করলে বিল্ডিং বিভাগের ডিজি-র বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে— সাফ বার্তা তাঁর।
পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, কোথাও বেআইনি নির্মাণ হলে প্রথমে মালিককে আইনি নোটিস দেওয়া হয়। এর পর পুরসভার লোকজন গিয়ে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেন। পুরো বিষয়টি তদারকির করার জন্য বিভিন্ন স্তরের অফিসাররা রয়েছেন। নিচুতলায় রয়েছেন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা। বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেলেই সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের লগ বুকে এন্ট্রি করতে হয়।
সেই মতো বেআইনি নির্মাণ ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু করেন এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়াররা। মেয়র জানিয়েছেন, বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেয়েও সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা লগ বুকে এন্ট্রি না করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এন্ট্রি করার পরও যদি বেআইনি নির্মাণ চলে, সে ক্ষেত্রে এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাড় পাবেন না ডিজিরাও।
‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে এক মহিলা ফোনে মেয়রের কাছে অভিযোগ করেন, পুরসভা বেআইনি নির্মাণ ভাঙার পরও সেখানে কাজ হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় হুমকি দিচ্ছে প্রোমোটার। ওই মহিলা ফোনে রীতিমতো কান্নাকাটি জুড়ে দেন। অভিযোগ শোনার পর মেয়র বিল্ডিং বিভাগের অফিসারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি ওই মহিলাকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘ওরা যতবার বানাবে, আমরা ততবার ভাঙব।’ নতুন করে যাতে সেখানে আর নির্মাণ না হয়, তার জন্য গার্ড পোস্টিংয়ের নির্দেশও দেন মেয়র।
কিছুটা হতাশার সুরেই তিনি বলেন, ‘একটা সময়ে আমার মনে হতো, আমরা যা করছি সব ঠিক করছি। তবে গার্ডেনরিচে বাড়ি ভেঙে পড়ার পর আমার চোখ খুলে গিয়েছে। মুশকিল হচ্ছে, বেআইনি বাড়ি ভেঙে দিয়ে আসার পরও ফের সেখানে কাজ শুরু হচ্ছে। তার মানে এরা আইনকে ভয় পাচ্ছে না। সে জন্য আইন সংশোধন করছি। বিধানসভার চলতি অধিবেশনে না হলেও পরের অধিবেশনে সেটা হয়ে যাবে।’
এর আগে মেয়র ঘোষণা করেছিলেন, বেআইনি নির্মাণের উপর পুলিশকে নজর রাখতে হবে। এ দিন অবশ্য মেয়র বলেন, ‘পুলিশ আমাদের প্রচুর সহযোগিতা করছে। তাদের অনেক কাজ করতে হয়। তা ছাড়া এত পুলিশ ফোর্স নেই যে, সব বাড়ির সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে করিয়ে রাখা যাবে।’