বেগুন তখন ১৫০ টাকা কেজি। পেঁয়াজ এই হাফ সেঞ্চুরি হাঁকাচ্ছে, তো টোম্যাটো সেঞ্চুরি। রেহাই নেই কোনও আনাজেই। এর মধ্যে হিমঘরের আলুও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে যেতে শুরু করেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে জরুরি বৈঠক করে নির্দেশ দিলেন, ১০ দিনের মধ্যে দাম কমাতে হবে সব আনাজের। সবার আগে আলু ও পেঁয়াজের দাম কমানোর লক্ষ্য ছিল।ঠিক হলো, চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি পেঁয়াজ কিনে পাঠাতে হবে রাজ্যের বিভিন্ন বাজার ও সুফল বাংলার স্টলগুলোয়। কেনা তো হলো, কিন্তু মুশকিল হলো, সে সব পৌঁছে দেওয়া নিয়ে। কারণ, লরি বা ট্রাক ভাড়া করে কৃষিপণ্য পাঠাতে গেলে তার দাম বেড়ে যাবে অনেকটাই। আবার সর্বত্র ট্রেন যোগাযোগ নেই। শেষ পর্যন্ত মুশকিল আসান হয়ে দাঁড়ালো সরকারি বাস।

পরিবহণ দপ্তরের কাছ থেকে বাস ভাড়া নিয়ে তাতে করেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হলো আলু-পেঁয়াজ। এবং ওই ভাবেই দাম নাগালে এল আনাজের। সাফল্য পাওয়ায় আপাতত এই মডেলই চলবে বলে জানানো হয়েছে। কৃষিপণ্য পাঠানোর জন্য সাধারণত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উপরেই বেশি নির্ভর করেন ব্যবসায়ীরা।

কারণ, ট্রেনে করে পণ্য পাঠাতে পারলে খরচ সব চেয়ে কম। কিন্তু সর্বত্র রেল যোগাযোগ নেই। অনেক ক্ষেত্রে তাই বাধ্য হয়েই ভরসা করতে হয় ট্রাকের উপর। সে ক্ষেত্রে আবার পরিবহণ খরচ অনেকটা যোগ হয়ে কৃষিপণ্যের দাম বেড়ে যায়। কৃষি দপ্তরের এক কর্তা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে প্রথম খোঁজ শুরু হয় রাজ্যে চাষ হওয়া পেঁয়াজের।

কারণ, নাসিকের পেঁয়াজের দাম তখন চড়া। মুর্শিদাবাদ-নদিয়ায় চাষিদের বাড়িতে মজুত ছিল বিস্তর পেঁয়াজ। ন্যায্য মূল্যে সেই পেঁয়াজ কিনে নেয় কৃষি দপ্তর। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় সেই পেঁয়াজ পাঠানোর ক্ষেত্রে। সেই সময়ে শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বাজারগুলোয় পেঁয়াজের দাম কেজি-তে ৫০ টাকা ছাড়িয়ে আরও ঊর্ধ্বমুখী।

খনি থেকে বকেয়া রয়্যালটি পাবে রাজ্য, রায় সুপ্রিম কোর্টের

সেই দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের উত্তর প্রান্তে পেঁয়াজ পাঠানো খুব জরুরি। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়, সরকারি বাসে করে পেঁয়াজ পাঠানো হবে। চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি পেঁয়াজ কিনে উত্তরবঙ্গ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠায় রাজ্য সরকার।

কৃষি দপ্তরের ওই কর্তা বলেন, ‘বাসে করে পেঁয়াজের পাশাপাশি আলু এবং অন্যান্য কৃষিপণ্যও পাঠানো হচ্ছে। তাতে খরচ অনেকটাই কমেছে। ফলে, বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের মতোই সাধারণ মানুষের নাগালে আনা গিয়েছে। সুফল বাংলার স্টলগুলোতেও পেঁয়াজ-আলু এবং অন্যান্য আনাজ বাজারের চেয়ে অনেকটাই কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version