রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ মঙ্গলবার সুখেন্দু-প্রসঙ্গে বলেন, ‘যদি উনি এক্স হ্যান্ডলের পোস্ট ডিলিটই করবেন, দুঃখপ্রকাশই করবেন, তা হলে আমি ভয় করব না, ভয় করব না বলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কী দরকার ছিল? আগেই বলেছি, উনি রজ্জুতে সর্পভ্রম করছেন। পুলিশ অকারণে কেন ওঁকে গ্রেপ্তার করতে যাবে?’
সুখেন্দু কেন তাঁর পোস্ট ডিলিট করলেন, তার কোনও ব্যাখ্যা এ দিন দেননি। তবে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার প্রতিবাদে যে আন্দোলন চলছে, তার প্রতি তাঁর সমর্থন বজায় রাখার কথা জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘আমার ৫৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন সার্বিক প্রতিবাদ কখনও দেখিনি। আমার বিবেককে এটা নাড়া দিয়েছে। আমি বিবেক-বর্জিত মানুষ নই, আমি অসামাজিক জীবও নই। সমাজে একটা ঘটনা ঘটবে, আমি চোখ বন্ধ করে থাকব? অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ করা যায় নাকি!’
আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় লালবাজারকে বিঁধে গত রবিবার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছিলেন সুখেন্দু। সেই পোস্ট নিয়ে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৫(১) ধারা মোতাবেক প্রবীণ সাংসদকে নোটিস পাঠায় কলকাতা পুলিশ। রবিবার তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা দেননি। লালবাজারে হাজিরা এড়িয়ে সোমবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে সুখেন্দু আর্জি জানান, যাতে পুলিশের নোটিস খারিজ করা হয়।
মঙ্গলবার রাজ্যের তরফে আইনজীবী অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মামলাকারীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডল পোস্ট ডিলিট করে দেবেন বলেছেন। ফলে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। এই মামলা পুলিশ এখানেই ক্লোজ় করে দেবে।’ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ জানান, দু’পক্ষের সহমতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই আদালত আপাতত এই মামলায় হস্তক্ষেপ করছে না। তবে আজ, বুধবার এই মামলার আবার শুনানি হবে। রাজ্য তাদের রিপোর্ট দেবে আদালতে। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে, সুখেন্দুশেখরের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা হবে না।
এ দিন সুখেন্দুর আইনজীবী অভিষেক হালদার বলেন, ‘এক্স হ্যান্ডলে তিনটি পোস্ট করেছিলেন সাংসদ। আরজি করের ঘটনায় সহমর্মিতা জানিয়ে এই পোস্ট করেছিলেন তিনি। সুখেন্দুর পোস্ট নিয়ে এক ব্যক্তি ১৭ অগস্ট এফআইআর করেন। পুলিশের আপত্তি ছিল ১৮ অগস্টের পোস্ট নিয়ে। কিন্তু ১৭ অগস্ট যে এফআইআর দায়ের হয়েছে, সেই এফআইআরের ভিত্তিতে ১৮ অগস্টের এক্স পোস্ট নিয়ে কী ভাবে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে?’
তাঁর আইনজীবী আরও জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা চলছে বলে তিনি পুলিশের কাছে সময় চান। কিন্তু ফের তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়। মাত্র ৪৫ মিনিটের মধ্যে রিপ্লাই দিতে বলা হয়। যা সম্ভব ছিল না।