আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে মদ্যপ অবস্থায় বাইক নিয়ে ঢুকে পড়ার অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বি টি রোডের সিঁথির মোড় এলাকা। শনিবার ভোর ৪টে থেকে বিটি রোডে অবরোধ শুরু হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা অবরোধ চলে। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, আরজি করের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সঞ্জয় রায় নামে এক যুবককে। সঞ্জয়ও একজন সিভিক ভলান্টিয়ার।

ঠিক কী অভিযোগ উঠেছে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে?

বিক্ষোভকারীরা জানান, শুক্রবার রাতে পুলিশের অনুমতি নিয়ে বি টি রোডের একাংশে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ছবি আঁকা, পথ নাটিকার আয়োজন করা হয়। মূলত রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উদ্যোগেই এই প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। ব্যারিকেড করে রাস্তার ওই অংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল পুলিশের অনুমতি নিয়েই। রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত এই কর্মসূচির জন্য অনুমতি দেওয়া হয়।অভিযোগ, রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ মত্ত অবস্থায় এক সিভিক ভলান্টিয়ার বাইক নিয়ে জমায়েতের এলাকায় ঢুকে পড়েন। এরপরেই তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা সিভিক ভলান্টিয়ারকে প্রশ্ন করেন, কী ভাবে তিনি ‘পুলিশ’ লেখা বাইকে চেপে আইন ভাঙতে পারেন? পড়ুয়ারা আরও বলেন, ‘আমরা এখানে ছেলেখেলা করতে আসিনি। আপনি আইনের রক্ষক হয়ে কী ভাবে আইন ভাঙলেন?’ হাতজোড় করে ওই সিভিককে ক্ষমা চাইতে দেখা যায়। পড়ুয়ারা ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে আরও বলেন, ‘ক্ষমার পর ক্ষমা করেই এই পরিস্থিতি। কী ভাবে ক্ষমা করব? আপনি মদ খেয়ে বাইক চালাচ্ছেন। যদি কোনও দুর্ঘটনা হত কে দায়িত্ব নিত?’

এরপরেই ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট রাস্তার ব্যারিকেড সরিয়ে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে সেখান থেকে বার করে দেন। তাতে আরও ক্ষোভ বাড়ে পড়ুয়াদের। তাঁরা সার্জেন্টকে বলেন, ‘ওঁকে কেন ছেড়ে দিলেন? অন্য কেউ যদি এভাবে মদ খেয়ে গাড়ি চালাতেন তাকে ছেড়ে দিতেন?’ কর্তব্যরত সার্জেন্টকে ঘিরে তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করেন পড়ুয়ারা। ঘটনার প্রতিবাদে ভোর ৪টে থেকে সিঁথির মোড়ে বি টি অবরোধ করেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট। এই অবরোধের ফলে বি টি রোডে প্রবল যানজট হয়।

এই ঘটনায় কাশীপুর থানা তদন্ত শুরু করেছে। ওই অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্তব্যরত ওই ট্রাফিক সার্জেন্টকেও জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর এমনটাই। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিরাককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জেনে বেলা ৮টা নাগাদ অবরোধ তুলে নেন পড়ুয়ারা। অবরোধ ওঠার পর ধীরে ধীরে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version