মণিপুস্পক সেনগুপ্ত
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ধর্মতলায় মঞ্চ বেঁধেছেন বিজেপি নেতারা। কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, কারও মুখের সামনে টিভি চ্যানেলের বুম। কিন্তু মঞ্চের সামনে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ভিড় তেমন নেই। অধিকাংশ দিন দুপুরের দিকে ধর্নামঞ্চ ভরাতে হিমশিম খাচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো, ১৬ তারিখ পর্যন্ত বিজেপির এই ধর্নামঞ্চ চলবে। কিন্তু মঞ্চ ঘিরে দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের ক্রমহ্রাসমান উৎসাহ দেখে চিন্তায় রাজ্য নেতৃত্ব।অথচ ওই মঞ্চে বসেই বিজেপি নেতারা রোজ দেখছেন, ধর্মতলায় এসে আছড়ে পড়ছে কোনও না কোনও নাগরিক মিছিল। সেখানে স্বতঃস্ফূর্ততা এবং ভিড়ে ভাটা পড়েনি। তা হলে বিজেপির ধর্নামঞ্চ জমছে না কেন? দলের একাংশের ব্যাখ্যা, ‘এই আন্দোলনটা নাগরিক আন্দোলন। সাধারণ মানুষ রাজনীতিকে তাঁদের পরিসরে ঢুকতে দিতে চাইছেন না। আমরাও নাক গলাতে চাইছি না।’

আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে প্রথমে গত ২১ অগস্ট শ্যামবাজারে ধর্নায় বসে বিজেপি। পাঁচ দিন ধর্না চলে। সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষের মতো নেতাদের বহু দিন পর শ্যামবাজারের ধর্নামঞ্চে একত্রে দেখা যায়। গেরুয়া শিবিরের দাবি, সেখানে ভিড় কম ছিল না। তবে আরও বেশি লোকের নজর টানতেই মঞ্চ সরিয়ে ধর্মতলায় আনার পরিকল্পনা করেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। হাইকোর্টের কাছ থেকে ছাড়পত্র আদায় করে গত ২৯ অগস্ট ধর্মতলায় ধর্নামঞ্চ স্থানান্তরিত করেন সুকান্তরা।

গোড়ায় দলের নেতা-কর্মীদের ভিড় হলেও দিন যত এগোচ্ছে ততই ভিড় কমছে বলে গেরুয়া শিবিরের পর্যবেক্ষণ। বিজেপির এক যুব নেতার কথায়, ‘যাঁদের অন্য কোনও কর্মসূচিতে যাওয়ার নেই, তাঁরাই বিকেলের দিকে ঘুরতে ঘুরতে ধর্মতলায় আসছেন। কিছুক্ষণ গল্পগুজব করে, চা খেয়ে চলে যাচ্ছেন। এতে লাভ কী হচ্ছে!’ যদিও বিজেপির কলকাতা উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষের দাবি, ধর্মতলার পাশাপাশি সব জেলাতেই আন্দোলন চলছে। তাই ধর্মতলায় উপচে পড়া ভিড় হচ্ছে না।

তাঁর কথায়, ‘এই তো সোমবার আমরা কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রালের অফিসে বিক্ষোভ দেখালাম। সেখানে দলের সর্বস্তরের কর্মীরা ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই ওই সময়ে ধর্মতলার মঞ্চে ভিড় কম ছিল।’

এখনও দিন পাঁচেক ধর্না চালাতে হবে বিজেপিকে। ইতিমধ্যে সকালের দিকের শুনশান ধর্নামঞ্চের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছে বলে গেরুয়া বাহিনীর অভিযোগ। সূত্রের খবর, ভিড় বাড়াতে কিছু কৌশল নিয়েছে বিজেপি। যেমন, আরজি কর ইস্যুতে এখন থেকে রোজ পথনাটিকার আয়োজন হবে।

নেতাদের বক্তৃতার সময় কাটছাঁট করে প্রতিবাদী গান আর স্লোগান হবে আরও বেশি করে। এক রাজ্য বিজেপি নেতার কথায়, ‘যাঁরা দলের কোনও সভায় কোনও দিন ভাষণ দেওয়ার সুযোগ পাননি, তাঁরাও ধর্মতলার মঞ্চে হাতে মাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছেন! দিনের ব্যস্ত সময়ে কে বলুন তো নিজের কাজ ফেলে সেই বক্তৃতা শুনবে!’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version