এলাকাটি হাতির করিডর। রেলকর্মীরাও ওই এলাকায় রেললাইন পরীক্ষা করতে গেলে দল বেঁধে যাতায়াত করেন। এমন একটি এলাকায় রেললাইনের উপরে লোহার পাত ও ড্রাম রাখা দেখতে পেয়ে ট্রেন থামান চালক। সহকারী চালককে ডেকে নিয়ে নিজেরাই লোহার পাত সরিয়ে দেন। সেবক রেল স্টেশনে খবর দিয়ে গ্যাংম্যানদের ডেকে আনা হয়। তাঁরা খালি পিচের ড্রাম সরিয়ে দেন। তার পরে ট্রেন রওনা হয়।
প্রথমে বোঝাই যায়নি যে, এমন অপকম্মের নায়ক কে হতে পারে! নাশকতার আশঙ্কা করে রেলের পক্ষ থেকে সে দিনই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়ে যায়। শেষপর্যন্ত আরপিএফের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তে নামার পরে শুক্রবার ধরা পড়েন দেবনারায়ণ। নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন তিনি। জঙ্গলের ভিতরে খালি পিচের ড্রাম আর লোহার পাত লাইনের ধারে পড়ে রয়েছে দেখে, সেগুলি বেচে দুটো টাকা পাওয়ার লোভ তিনি নাকি সামলাতে পারেননি।
ধরা পড়ার পরে তিনি জানিয়েছেন, জঙ্গলের ভিতর থেকে এতগুলি জিনিস নিয়ে যাওয়া অসম্ভব বুঝে তিনি সেগুলি রেললাইনের উপরে ফেলে রেখেছিলেন যাতে সেগুলি ট্রেনের চাপে তুবড়ে আকারে ছোট হয়ে যায়।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কিশোর কিঞ্জল শর্মা বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত। সৌভাগ্যক্রমে তেমন কিছু হয়নি। ধৃতের বাড়ি ওই এলাকাতেই। আরপিএফের কর্মীরা ঘটনার তদন্তে নেমে দেবনারায়ণকে গ্রেপ্তার করে।’
তবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল ঘটনাটি এত সহজ ভাবে নিচ্ছে না। ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে। নিছক দু’টো পয়সা আয়ের জন্যই এমন দুর্বুদ্ধি মাথায় চেপেছিল নাকি অন্য কোনও মতলব ছিল, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত জুন মাসেই শিলিগুড়ির কাছে রাঙাপানিতে দুটো ট্রেনের সংঘর্ষে দশ জনের মৃত্যু হয়। তার পরে পর পর দু’বার রাঙাপানিতে তেলের ডিপোয় ঢোকার সময়ে দুটো তেলের ট্যাঙ্কারবাহী ট্রেন বেলাইন হয়। এর পরে এমন একটি ঘটনায় বেশ শোরগোল পড়েছে।