হাইকোর্টের বক্তব্য ছিল, মেট্রো প্রকল্প বৃহত্তর জনকল্যাণের দিক থেকে জরুরি। আর গাছ কাটা বা প্রতিস্থাপনের বিষয়ে বিধিবদ্ধ অনুমোদন নিয়েই প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে আরভিএনএল। ফলে সেই কাজ ব্যাহত হোক—এমন নির্দেশ দেবে না হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন বা এসএলপি দায়ের করে পাবলিক। সেই এসএলপি-র শুনানিতেই শুক্রবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি গাভাই ও বিচারপতি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করে রাজ্য সরকার, আরভিএনএল-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের লিখিত বক্তব্য তলব করেছে।
তিন সপ্তাহ পরে ফের হবে শুনানি। ততদিন অন্তত গাছ কাটা বা প্রতিস্থাপনের মতো কাজ করতে পারবে না আরভিএনএল। তবে গাছ না-কেটে, না-সরিয়ে নির্মাণকাজ এগোনো গেলে, তা করা যাবে বলে জানানো হয়েছে নির্দেশে। পূর্ণাঙ্গ শুনানির পর পরবর্তী নির্দেশ দেবে শীর্ষ আদালত।
১৬.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ জোকা-ধর্মতলা প্রকল্পে এখন জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত মেট্রো চলছে। পরবর্তীতে মোমিনপুর হয়ে ধর্মতলা অবধি এই রুট সম্প্রসারণের কাজও শুরু হয়েছে। সেই অংশের কাজেই ভিক্টোরিয়া স্টেশন নির্মাণ এবং মাটির তলায় লাইন পাতার ক্ষেত্রে ময়দান এলাকায় ৯০০-র বেশি গাছের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এর আগে আরভিএনএল হাইকোর্টে শুনানিতে জানিয়েছিল, কিছু গাছ কাটতেই হবে। কিছু গাছ অন্যত্র প্রতিস্থাপন করা হবে। এক-একটি গাছ কাটার বিনিময়ে নিয়ম মেনে চারা রোপণ করা হবে বলেও জানিয়েছিল আরভিএনএল। মামলাকারী পাবলিক-এর দাবি, গাছ কাটা, প্রতিস্থাপন বা পরিপূরক বৃক্ষরোপণ নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাই জমা দিতে পারেনি আরভিএনএল।
ময়দান এলাকার প্রাচীন গাছগুলি কেটে ফেলে অন্যত্র চারা রোপণে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ আদপে সম্ভবই নয় বলেও হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছে পাবলিক। তারা নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়ে গোটা প্রকল্পের পর্যালোচনারও দাবি জানিয়েছে। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কাজে কোনও বৃহত্তর জনকল্যাণও অসম্ভব বলে তাদের বক্তব্য।
