ফের ভেস্তে গেল জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক। ভেস্তে যাওয়ার প্রধান কারণ জুনিয়র ডাক্তারদের লাইভ স্ট্রিমিং-এর দাবিকে মান্যতা না দেওয়া। ফলে আরজি কর কাণ্ডের জেরে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কর্মবিরতি কবে উঠবে? তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ১৫ জন প্রতিনিধি নিয়ে আসার কথা বলা হয় ই-মেলে। কিন্তু এ দিন ৩৫ জনকে নিয়ে কালীঘাটে যান জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে বৈঠকের ক্ষেত্রে বাধ সাধে ‘লাইভ স্ট্রিমিং’-এর দাবি। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘এই বৈঠক আমরা সরাসরি সম্প্রচারের দাবি করেছিলাম। আমাদের সঙ্গে নিজস্ব ভিডিয়োগ্রাফার রয়েছে। কিন্তু তাঁকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’

বৈঠক না করলে অন্তত এককাপ চা খেয়ে যাও

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

এরপর লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে জটিলতার কারণে থমকে থাকে বৈঠক। ২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। এ দিকে শুরু হয় বৃষ্টি। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেককে ছাতা দেওয়া হয়েছে। বসার জায়গা দেওয়া হয়েছে। তোমরা কেউ ভিজবে না, এটা আমার অনুরোধ। তোমাদের চিঠিতে কোথাও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের কথা লেখা ছিল না, আমাদের চিঠিতেও ছিল না। আমরা পুরো বৈঠক রেকর্ড করে রাখব। তোমাদেরও পরে দেব। যেহেতু মামলাটি বিচারাধীন তাই কোথাও প্রকাশ করব না।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠক না করলে অন্তত এককাপ চা খেয়ে যাও। ভিজবে না। আমার কাছে শুকনো জামাকাপড় রয়েছে। প্রয়োজনে তোমাদের দিয়ে দিচ্ছি।’ যদিও এই আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করেন আন্দোলনকারীরা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন, ‘বৈঠকের ভিডিয়ো রেকর্ড করা হবে আমাদের তরফে। তা আজকে দিতে পারব না। তোমরা আসতে চাইলে দয়া করে এস। তোমরা যদি বৈঠক না করতে চাও তাহলে কেন চিঠি দিলে? কেন অসম্মান করছ? আগেও তিন দিন আমি দু’ঘণ্টা করে অপেক্ষা করেছি। আমি তোমাদের কাছে ছুটে গিয়েছি। এই সম্মানটুকু তো দেবে? রাজনীতি ভুলে মানুষের স্বার্থে এস। মিনিটস সই করে দেব, আমাদের তরফে একজন সই করবে, তোমাদের তরফেও এক জন সই করে দেবে।’

আন্দোলনকারীদের সমস্ত দাবি মানা সম্ভব নয় তা জানিয়েও রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের বার্তা, ‘আমি কেন আজকেই ভিডিয়ো দিতে পারব না তা আগেও জানিয়েছি। আগে সুপ্রিম কোর্ট থেকে অনুমতি নেব, তারপর তোমাদের ভিডিয়ো দেব। ততদিন আমরাও এই ভিডিয়ো ব্যবহার করব না।’

কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে জুনিয়র ডাক্তাররা

অন্যদিকে, জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য ছিল, তাঁরা ৭৫০০ জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি। তাই কী আলোচনা হবে এই বৈঠকে তা নিয়ে তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে সকলকে। তাই তাঁরা লাইভ স্ট্রিমিং অথবা ভিডিওগ্রাফি চাইছেন। এ দিন রাত ৯টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে যান মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পরে কালীঘাট ছাড়েন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরাও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version