এই সময়: কলকাতায় ৪৮ ঘণ্টায় ১০৫.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি! বর্ষার চারটি মাসের শেষ মাস, অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের প্রথম ১২ দিনে ৩২ মিলিমিটারের কম বৃষ্টি পেয়ে বর্ষার ঘাটতি ফের অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল মহানগরে। শুধু রাজ্যের রাজধানীই নয়, অগস্টের পর গোটা দক্ষিণবঙ্গই নতুন করে বৃষ্টির ঘাটতির কারণে ভুগতে শুরু করেছিল। সেপ্টেম্বরের ৯-১০ তারিখে বঙ্গোপসাগরে তৈরি একটি নিম্নচাপের প্রভাবে রাজ্যের দক্ষিণ ভাগ বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি পেয়েছিল ঠিকই।তবে তার পরিমাণ ঘাটতি মেটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। সেই নিম্নচাপের প্রভাব ভালো ভাবে কাটার আগেই মিয়ানমারের উপর ফের তৈরি হলো আরও একটি নিম্নচাপ। এবং নতুন তৈরি ওই ওয়েদার সিস্টেমে কিছুটা হলেও যেন কপাল ফিরল বাংলার, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের।

আবহবিদদের মতে, কোনও জায়গা ২৪ ঘণ্টায় ৬৫ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি পেলে তাকে ‘ভারী বৃষ্টি’-র আখ্যা দেওয়া যায়। সেই হিসেবে কলকাতা শেষবার ‘ভারী বৃষ্টি’ পেয়েছিল ২৮ জুন। সে দিন শহরে ৯২.৬ মিমি বৃষ্টি হয়েছিল। তার ৭৭ দিন পর, ১৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে আসা নিম্নচাপের প্রভাবে মহানগর ভারী বৃষ্টি পেল। রবিবার, আবহবিদদের হিসেবে, কলকাতায় ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ ৭২.৪ মিলিমিটার।

পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজির (আইআইটিএম) হিসেব অনুযায়ী, ১ জুন থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ১০২৭.৫ মিমি বৃষ্টি হলে তাকে ‘স্বাভাবিক’ বৃষ্টি বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু এ বছর এখনও পর্যন্ত ওই নির্দিষ্ট সময়ে বাংলা ৮৯০.৬ মিমি বৃষ্টি পেয়েছে। অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত বাংলায় স্বাভাবিক বৃষ্টির চেয়ে ১৩ শতাংশ ঘাটতি।

গভীর নিম্নচাপে দক্ষিণবঙ্গে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা

রবিবার দুপুরে আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের উপর থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর সরে আসা নিম্নচাপটি কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার উপর থেকে আরও প্রায় ৯০ কিলোমিটার সরে বাঁকুড়ার উপর অবস্থান করছে। কলকাতার উপর থেকে সরে গেলেও মহানগর ও তার সংলগ্ন এলাকায় ওই নিম্নচাপের প্রভাব থেকে যাবে আরও অন্তত দু’দিন। সে জন্য বৃষ্টি এখনই থামবে না।

তবে তার আগেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় সব চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের নিরিখে দিঘা চলে গিয়েছে ১ নম্বরে। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া, বাঁকুড়ায় ১০৮ মিমি, পানাগড়ে ৯৫ মিমি, মেদিনীপুরে ৮৪ মিমি এবং শ্রীনিকেতনে ৮২ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার রাতের পর থেকেই নিম্নচাপ ক্রমশ ঝাড়খণ্ডের দিকে সরতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে নিম্নচাপের শক্তিও।

রবিবার দুপুর পর্যন্ত ‘গভীর নিম্নচাপ’ হিসেবে থাকলেও তার পর ধাপে ধাপে শক্তি খুইয়ে ওই নিম্নচাপ পরিণত হয়েছে ‘সাধারণ নিম্নচাপে’। তবে নিম্নচাপ দুর্বল হলেও বাঁকুড়ার উপর থেকে বাংলাদেশ ও সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে একটি মৌসুমি অক্ষরেখাও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version