মণিপুষ্পক সেনগুপ্ত
আরজি কর আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি কী হবে, তা নিয়ে বিজেপিতে নানা মুনির নানা মত। দলের একাংশ চাইছে, আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়াতে। দলের অন্য অংশ চাইছে, জল মাপতে। আরজি করের ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের অন্দরের এই দড়ি টানাটানি এ বার প্রকাশ্যে চলে এসেছে মিঠুন চক্রবর্তীর একটি ঘোষণার প্রেক্ষিতে।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে ১০ দিন ধর্মতলায় মঞ্চ বেঁধে ধর্নায় বসেছিলেন বিজেপি নেতারা। সোমবারই সেই ধর্না শেষ হয়েছে। আন্দোলন জিইয়ে রাখতে এ বার কী করবে বিজেপি? শেষ দিনের ধর্নামঞ্চ থেকে একগুচ্ছ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বঙ্গ-বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়েছেন বঙ্গ-বিজেপির কোর কমিটির সদস্য, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীদের উপস্থিতিতেই মিঠুন ধর্মতলার মঞ্চ থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন! যা নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর চর্চা চলেছে গেরুয়া শিবিরে। প্রশ্ন উঠেছে, নবান্ন অভিযানের মতো কর্মসূচির কথা মিঠুন কী ভাবে ঘোষণা করেন? কারণ, ভবিষ্যৎ আন্দোলন নিয়ে সুকান্ত মজুমদার যে সব কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, তাতে কোথাও নবান্ন অভিযানের উল্লেখ নেই।

রাজ্য বিজেপির এক বর্ষীয়ান নেতার মন্তব্য, ‘নবান্ন অভিযানের কোনও পরিকল্পনা হয়েছে বলে তো আমার জানা নেই। এ রকম সিদ্ধান্ত হয়ে থাকলে সেটা সুকান্ত নিজেই ঘোষণা করতেন। আর অরাজনৈতিক কোনও সংগঠনের ব্যানারে নবান্ন অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়ে থাকলে সেটা তো বিজেপির মঞ্চ থেকে ঘোষণা করার কথা নয়।’
ধর্মতলায় ধর্না শেষে কী করণীয়, ধন্দে গেরুয়া শিবির
ঠিক কী বলেছেন মিঠুন?
আরজি কর আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়ানোর বার্তা দিয়ে মিঠুন বলেন, ‘আবার নবান্ন অভিযান হবে। আমি নিজে সেই অভিযানে থাকব। আর এই অভিযান ব্রিজের (বিদ্যাসাগর সেতু) কাছে থামবে না। নবান্নে গিয়েই থামবে। আমরা থাকব সামনের সারিতে। দেখি, কত গুলি চালাতে পারে।’ আরজি কর নিয়ে এখনও পর্যন্ত একটিই নবান্ন অভিযান হয়েছে। সেটাও বিজেপির ব্যানারে নয়, ‘ছাত্র সমাজ’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে। যদিও সেখানে বিজেপি নেতা-কর্মীদেরই ভিড় ছিল। তৃণমূলেরও দাবি, ‘ছাত্র সমাজের’ নামে ওটা ছিল বকলমে বিজেপির নবান্ন অভিযান।

ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ থেকে মিঠুন কি সে রকম কোনও নবান্ন অভিযানের কথা বলতে চেয়েছেন? সপ্তাহ কয়েক আগে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন, একই দিনে নবান্ন, লালবাজার ও কালীঘাট অভিযান হবে। কবে এবং কাদের ব্যানারে হবে, সেটা পরে ঘোষণা করবেন বলে তিনি জানান। বিরোধী দলনেতার সেই দাবির সুত্রেই মিঠুন ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ থেকে নবান্ন অভিযানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন বলে মনে করছেন পদ্ম ব্রিগেডের কেউ কেউ।

তবে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বর দাবি, এই মুহূর্তে তাঁদের কোনও নবান্ন অভিযান কর্মসূচি নেই। মিঠুন প্রতীকী অর্থে এ কথা বলেছিলেন। রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাছ থেকে জাস্টিস পাওয়া যাবে না। এখানে সবই পুরস্কার। আসল কথা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে থাকলে কোনও জাস্টিসই মিলবে না। সেটাই বলতে চেয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। কোনও কর্মসূচি ঘোষণা করেননি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version