এই সময়: সল্টলেকের একটি হোটেলের সূত্রে ঘুরে গেল আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তদন্তের অভিমুখ। ওই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ হাউস স্টাফ আশিস পাণ্ডের গতিবিধি এ বার চলে এলো সিবিআইয়ের স্ক্যানারে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে, গত ৯ অগস্ট ঘটনার দিন সল্টলেকের একটি হোটেলে উঠেছিলেন আশিস। পরের দিন সকালে আবার চেক-আউটও করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন এক মহিলা।গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখতে চাইছেন, ঘটনার ঠিক পরের দিন সকালে হঠাৎ করে কেন হোটেল ছেড়ে চলে গেলেন টিএমসিপির আরজি কর ইউনিটের দায়িত্বে থাকা ওই নেতা। তাঁর সন্দেহজনক গতিবিধির বিষয়ে খোঁজ নিতে বৃহস্পতিবার ওই হোটেলের এক কর্মীকে তলব করে সিবিআই। তিনি গোয়েন্দাদের হাতে রেজিস্টার বুকের নথি তুলে দেন।

এরপর হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সিজিও-তে ডেকে পাঠানো হয় আশিসকে। রাত পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নথি অনুযায়ী, একটি অ্যাপের মাধ্যমে সল্টলেক সেক্টর দুই-এর ওই হোটেলে রুম বুক করা হয়েছিল। ৮ অগস্ট বেলা ১২টা নাগাদ চেক-ইন করেন আশিস পাণ্ডে। ঘটনাচক্রে, তার কয়েকঘণ্টা পরে ওই দিন ভোররাতেই ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার আশিসের কথা সামনে আসার পরে জুনিয়র ডাক্তাররা অভিযোগ করেন, ঘটনার পরে অকুস্থলে যে ভিড় হয়েছিল, সেখানেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। ফলে এটা বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয় যে, তিনি হোটেল থেকে সরাসরি হাসপাতালে চলে গিয়েছিলেন।

জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের আরও অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে খাতায়-কলমে আরজি কর হাসপাতালে হাউস স্টাফের পদে রয়েছেন ‘থ্রেট সিন্ডিকেট’-এর অন্যতম মাথা আশিস। টার্গেট করে করে বিভিন্ন জুনিয়র ডাক্তারদের পরীক্ষায় ফেল করাতেন তিনি। সন্দীপ ছাড়াও ‘বিতর্কিত’ চিকিৎসক অভীক দে-রও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই আশিস। অকুস্থলে সেদিন আশিসের পাশাপাশি অভীককেও দেখা গিয়েছিল।

RG Kar Incident: তিলোত্তমা কাণ্ডে জোড়া গ্রেপ্তারি, সন্দীপের সঙ্গে সিবিআই জালে টালা থানার ওসি

এ দিন আশিসের নাম সামনে আসার পরে তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, ‘ওই নামে তৃণমূল ছাত্র পরিষদে কেউ রয়েছে কি না, তা বলতে পারব না। তৃণমূল করত কি না, সেটাও আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তদন্তের স্বার্থে কাউকে স্ক্যানারে আনা হতেই পারে। গোটা বিষয়টি সিবিআই দেখছে। আমরা বলছি, তারা দ্রুত তদন্ত শেষ করুক।’

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘সারা রাজ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে সাসপেন্ড করা চেষ্টা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি দ্রুত সত্য সামনে আসবে।’

সিবিআই সূত্রের দাবি, এর আগেও অকুস্থলে উপস্থিত ছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল। জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের দাবি, আশিসের সঙ্গে শুধু সন্দীপ নন, যোগাযোগ ছিল রোগী কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়েরও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version