এই সময়: দিন দশেক আগেও কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণে খুচরো বাজারে বেগুনের দাম ছিল ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। রবিবার সেটাই বিক্রি হলো ৮০-১২০ টাকা কেজি দরে। অথচ, পাইকারি বাজারে এ দিন বেগুনের দাম ঘোরাফেরা করেছে ৫০-৭০ টাকার মধ্যে। আবার, পাইকারি বাজারে যে টম্যোটোর দাম এদিন ছিল ৪০-৪৫ টাকা, তা-ই খুচরো বাজারে বিক্রি হয়েছে দ্বিগুণ দামে। পুজোর আগে আনাজপাতির দাম রীতিমতো ছেঁকা দিচ্ছে সাধারণ মানুষের হাতে।

খুচরো ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যার কারণে সব্জির জোগানে ভাটা পড়েছে। তাই এমন পরিস্থিতি। যদিও দাম নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের গঠিত টাস্ক ফোর্সের দাবি, কলকাতায় আনাজপাতি আসে মূলত দুই ২৪ পরগনা এবং নদিয়া থেকে। সেখানে বন্যার তেমন প্রভাব পড়েনি।

তা ছাড়া, পাইকারি বাজারেও দামে বিশেষ হেরফের হয়নি। বন্যার অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন খুচরো ব্যবসায়ীদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার বিকেল চারটেয় ব্যবসায়ী সংগঠন ও টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, তা নিশ্চিত করতে নবান্নের নির্দেশে রবিবার সন্ধ্যায় গড়িয়াহাট, লেক এবং যদুবাবুর বাজারে যান টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। কথা বলেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে।

বস্তুত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই পুজোর মুখে দাম নিয়ন্ত্রণে টাস্ক ফোর্সকে সক্রিয় করা হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট বিভাগকে সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘প্রতিদিনই বাজারে ঘুরবে টাস্ক ফোর্স। পুজোয় আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও সক্রিয় করা হয়েছে। তারা সুফল বাংলার পাশাপাশি হিমঘর থেকে আলু কিনে সরকারি দামে খোলা বাজারে বিক্রি করবে।’

তিনি অবশ্য জানান, গ্রীষ্মকালীন আনাজের দাম এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাইরের রাজ্য থেকে আসা পেঁয়াজ, টোম্যাটোর দাম কিছুটা বেড়েছে বলে তিনি মেনে নিচ্ছেন। কিন্তু বাজারে যাতে কৃত্রিম ভাবে দাম বাড়ানো না-হয়, সে দিকেই বাড়তি নজর দেবে টাস্ক ফোর্স।

বন্যা-কবলিত এলাকায় অস্থায়ী বিপণন কেন্দ্রের মাধ্যমে আনাজ বিক্রি করা হচ্ছে বলেও জানান বেচারাম। বলেন, ‘ রাজ্যে ছ’শোর বেশি সুফল বাংলা কেন্দ্র কৃষকদের থেকে লাভজনক দামে আনাজ কিনে বাজারের থেকে কম দামে বিক্রি করছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সমবায় বিভাগের পরিচালনায় অতিরিক্ত দু’শোটি স্টল খোলা হয়েছে। আরও সুফল বাংলা কেন্দ্র তৈরির জন্য ৫০টি মালবাহী গাড়িও কেনা হচ্ছে।’

বন্যার প্রভাবে অনেকখানি বেসামাল হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদনীপুর। টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের বক্তব্য উড়িয়ে মানিকতলার আনাজ-ব্যবসায়ী অনন্ত দে বলেন, ‘হাওড়া, হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। সেখানকার বহু ফলন নষ্ট হওয়ার কারণেই জোগানে ঘাটতি। দাম তো বাড়বেই।’

যদিও টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমলে দে-র কথায়,‘দুই ২৪ পরগনা ও নদিয়া থেকে যে আনাজ আসে, তা কলকাতার জন্য পর্যাপ্ত। খুচরো বাজারে দাম বেড়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণেই।’ তাঁর সঙ্গে একমত কৃষি বিপণন দপ্তরের কর্তারা।

এক নজরে বাজারদর (কেজি প্রতি টাকায়)
চন্দ্রমুখী আলু ৩৫-৪০
জ্যোতি আলু ৩০ -৩৫
বেগুন ৮০- ১২০
পটল ৬০- ৮০
বাঁধাকপি ৪০-৬০
টোম্যোটো ৬০- ৮০



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version