পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ বছরের কৈলাশের সাইবার ক্রাইমে হাতেখড়ি বছর তিনেক আগে। তখন থেকেই তার চালচলন বদলে যায়। বিরাট বাড়ি, একাধিক এসইউভি দেখে অবাক হলেও কৈলাশের উল্কার মতো উত্থানের পিছনে যে সাইবার প্রতারণার মতো অপরাধ রয়েছে, তা টের পাননি গ্রামের বাসিন্দারা।
রবিবার তার বাড়িতে পুলিশ হানা দেওয়ার পর বিষয়টি প্রথম সামনে আসে। শুধু কৈলাশই নয়, ঝিলিমিলি-বারিকুল সমেত সংলগ্ন একাধিক গ্রামের যুবকেরা এই আর্থিক প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কী ভাবে অপারেশন চালাত কৈলাশ?
উত্তরে পুলিশ জানিয়েছে, চক্রটি ভিপিএন ব্যবহার করায় প্রতারণার শিকড় কখনও সিঙ্গাপুর, কখনও মালয়েশিয়া আবার কখনও দুবাই বা অন্য কোথাও দেখাতো। ফলে প্রতারকরাও ধরা পড়ত না।
তিন-চার মাস আগে কেন্দ্রীয় সরকার সাইবার ক্রাইম রুখতে ‘প্রতিবিম্ব সফটওয়্যার পোর্টাল’ চালু করে। সাইবার প্রতারণার শিকার কেউ অভিযোগ জানালে কোন জেলা থেকে প্রতারণা করা হচ্ছে, তার কিছু নির্দিষ্ট তথ্য এই পোর্টলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলার সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ অফিসাররা জানতে পারেন। সে রকমই একটি তথ্যের ভিত্তিতে কৈলাশপতির বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের কাছে সাইবার ক্রাইমের কথা স্বীকারও করেছে সে।
ঝাড়গ্রাম জেলার ডিএসপি(সাইবার ক্রাইম) সব্যসাচী ঘোষ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করছিল ওই যুবক। ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বরের ভিত্তিতে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল। ওই নম্বরগুলির টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে আমরা যুবকের বাড়ি পৌঁছই। তারপর সাইবার ক্রাইমের বেশ কিছু জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। যেগুলি ব্যবহারের উপযুক্ত কোনও নথি বা কারণ দর্শাতে পারেনি সে। তাকে গ্রেপ্তার করে চক্রের খোঁজ চালানো হচ্ছে।’
পুলিশ সোমবার ধৃতকে ঝাড়গ্রামের সিজেএম বিচারক মানবেন্দ্রনাথ ঘোষের এজলাসে তোলে। এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত, তা জানার জন্য এবং বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য আদালতে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী অফিসার। সরকারি কৌঁসুলি অনিল মণ্ডল বলেন, ‘বিচারক তদন্তের স্বার্থে চার দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।’