এই সময়, বোলপুর: বাবা দাপুটে নেতা হলেও রাজনীতির ধারেকাছে ছিলেন না মেয়ে। পড়াশোনা নিয়েই তাঁর সময় কাটত। প্রাথমিক স্কুলের দিদিমণিও হয়েছিলেন সুকন্যা। কিন্তু গোরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তাঁকেও গ্রেপ্তার করে সিবিআই। দীর্ঘদিন জেলহাজতে থাকার পরে ছাড়া পেলেও বাবার জামিনের অপেক্ষায় থেকে যান দিল্লিতে।সোমবার তিহাড় জেল থেকে অনুব্রত ছাড়া পাওয়ার সময়ে গেটের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন সুকন্যা ও বাড়ির কর্মী বিশ্বরূপ মণ্ডল। রাতের উড়ানে দিল্লি থেকে সোজা দমদম বিমানবন্দর। তারপর গাড়িতে করে সকাল ৯টার আগেই বোলপুরে নিচুপট্টির বাড়িতে পৌঁছে যান দু’জনে। তাঁদের স্বাগত জানাতে তখন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভিড়। পার্টি অফিসে সুকন্যাকে নিয়ে পাশাপাশি বসেন কেষ্ট।

ঘরে তখন কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ, নলহাটির বিধায়ক রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং, রাজনগরের ব্লক সভাপতি সুকুমার সাধু ছাড়াও ঘনিষ্ঠ লোকজন। কথা চলছিল তাঁদের মধ্যে। হঠাৎ-ই আবেগঘন হয়ে পড়েন সুকন্যা। কাঁদতে থাকেন।

বাড়ি ঢোকার আগে চোখে জল জামিনে মুক্ত অনুব্রতর
সামনে বসে থাকা সুদীপ্ত, রাজেন্দ্রকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘কাকু, আমি তো রাজনীতি করি না। আমার কী দোষ ছিল।’ মেয়ের জেল-যন্ত্রণার কষ্টে তাঁর চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসে। দু’হাত দিয়ে চেপে ধরেন চোখ। পরে রাজেন্দ্রপ্রসাদ বলেন, ‘সতিই বলুনতো, ওই মেয়েটা কী অন্যায় করেছিল? খুব কাঁদছিল। দিল্লির ‘জল্লাদরা’ ওকে অন্যায় ভাবে শাস্তি দিয়েছে।’

Anubrata Mondal: ‘ধুলো পছন্দ করেন না কেষ্টদা’, অনুব্রতর অফিসে পালিশ থেকে ঝাড়পোঁছ

তিহার থেকে বেরিয়ে বাবার জামিনের জন্য দিল্লিতে উকিলদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, টাকাপয়সার ব্যবস্থা করা, সব কাজই একা হাতে সামলেছেন সুকন্যা। দলের কাউকেই তেমন ভাবে পাশে পাননি। একা লড়াই করতে করতে অনেক পরিণত। ভালো-মন্দ সবটা বুঝেতে পেরে বাবার চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ এখন তাঁর হাতেই। কী খাবে, কোথায় কার সঙ্গে কথা বলবে, সব টাই। কেষ্টও ‘ঠকে’ শিখে এখন মেয়ের কথা শোনেন মন দিয়ে।

কেষ্টর বড়দা সুব্রতও সুকন্যার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘরের মেয়েটার লড়াই একবার ভাবুন তো! ও তো রাজনীতির ধারে কাছে ছিল না। শুধু ওর অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা থাকার অভিযোগে এত অত্যাচার।’ রাজ্যের এক মন্ত্রীর নাম করে তাঁর সংযোজন, ‘ওঁর মেয়ের নামেও তো অনেক টাকা আছে বলে শুনেছি। ওঁকে তো কিছু করছে না সিবিআই।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version