এই সময়: আর্থিক দুর্নীতির পাশাপাশি আরজি করের ধর্ষণ-খুনের মামলার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ইতিমধ্যেই হাজতে যেতে হয়েছে তাঁকে। এ বার আরও দুই নতুন অভিযোগ উঠল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। ওই হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের প্রাক্তন প্রধান সোমনাথ দাস শুক্রবার অভিযোগ তুললেন সন্দীপের জমানায় আরজি করের মর্গ থেকে ময়নাতদন্তের আগেই মৃতদেহ আনা হতো প্রশিক্ষণের নামে।প্রাক্তন অধ্যক্ষের এই কাজে সায় না-দেওয়াতেই তাঁকে আরজি কর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ সোমনাথের। এই বিষয়ে সিবিআইয়ের কাছে কিছু নথিপত্রও এ দিন জমা দেন তিনি। এ দিকে, বেলেঘাটায় সন্দীপের বাড়িতেও বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ আসার পরে বাড়ির গেটে নোটিস সাঁটিয়ে দিয়ে এসেছে পুরসভা।

পুরসভা সূত্রের খবর, সন্দীপের এক প্রতিবেশী গত ১১ সেপ্টেম্বর পুরসভার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, সন্দীপের চারতলা বাড়ির একাংশ বেআইনি ভাবে তৈরি করা হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়েরও নিয়ম মানা হয়নি। সেই অভিযোগ পাওয়ার পর এ দিন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সন্দীপ ঘোষের বাড়ির বাইরে একটি নোটিস সাঁটিয়ে দিয়ে যান পুর আধিকারিকেরা। প্রতিবেশী এক মহিলার কথায়, ‘সন্দীপের বাড়ি লাগোয়া ঠিকানার এক বাসিন্দা বাউন্ডারি ওয়াল নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই সময়ে সন্দীপ অভিযোগকারীদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছিলেন। বাড়ির জায়গায় র‍্যাম্প করেছিলেন, যাতে গাড়ি ওঠা-নামানো যায়। তাতে প্রতিবেশীদের অসুবিধা হচ্ছিল।’

পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক কর্তা জানান, বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ এলে এখন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাই অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ওই ঠিকানায় লোক পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু দরজা বন্ধ থাকায় সেখানে ঢোকা যায়নি। নিয়ম অনুযায়ী, পুরকর্মীরা কোথাও ভিজি়টে গেলে সেখানে যদি বাধা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেক্ষেত্রে পুর আইনের ৫৪৪ ধারায় প্রথমে নোটিস দেওয়া হয়। থানাকেও তার কপি পাঠানো হয়। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তদন্ত করতে যান পুরকর্মীরা। এক্ষেত্রেও তাই করা হবে।

Sandip Ghosh: আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সন্দীপ-সহ ৪ জনের জেল হেফাজত

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বাড়িটি প্ল্যান নিয়েই তৈরি করা হয়েছে। বাড়ির কমপ্লিশন সার্টিফিকেটও রয়েছে। সম্ভবত, পার্কিংয়ের জায়গায় কিছু ইন্টারনাল ডেভিয়েশন হয়ে থাকতে পারে। অন্য দিকে, মর্গের ইস্যুতে সোমনাথের দাবি, গত বছরের জানুয়ারি মাসে আরজি করের ইএনটি বিভাগের একটি ওয়ার্কশপ ছিল। সেখানে পিজিটিদের টেলিস্কোপিক সাইনাস সার্জারি শেখানো হচ্ছিল।

সেই সময়ে ময়নাতদন্ত হয়নি, এমন ৫টি দেহ আরজি করের মর্গ থেকে প্রশিক্ষণের জন্য চেয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের তৎকালীন প্রধান সোমনাথ দাস তাতে রাজি হননি। তখন সন্দীপই চাপ সৃষ্টি করে সোমনাথকে সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। বদলি হন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। তাঁর জায়গায় আসেন প্রবীর চক্রবর্তী। অভিযোগ, তাঁর উপরেও চাপ সৃষ্টি করেন সন্দীপ। সূত্রের খবর, আগামী ৩ অক্টোবর বয়ান রেকর্ডের জন্য সোমনাথকে ফের তলব করা হতে পারে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version