কাফিল নিজের পকেট থেকে খরচ করে বহু কষ্টে বাঁচিয়েছিলেন বেশ কিছু শিশুকে। তারপরও উত্তরপ্রদেশ সরকার তাঁকে ন’মাসের জন্য জেলে পুরে দেয়। পুলিশের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগ অতীতে বহুবার করেছেন তিনি। এমনকী, এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনে সামিল হওয়ার কারণেও তাঁকে সাত মাস জেলে অসহনীয় পরিস্থিতিতে কাটাতে হয়।
গোরক্ষপুরের সেই ঘটনা ও পরে তাঁর হাজতবাসের উপরে লেখা বইটি এ দিন বাংলায় প্রকাশ করতে মহানগরে এসেছিলেন কাফিল। তাঁর কথায়, ‘আমি যখন জেলে ছিলাম, তখন বাংলার বহু মানুষ আমার জন্য রাস্তায় নেমেছেন।’
ডাক্তারের সংযোজন, ‘এনআরসি আন্দোলনের সময়ে উত্তরপ্রদেশ এসটিএফের হাতে আমি মরেই যেতাম। দিনের পর দিন আমাকে খাবার আর জল দেওয়া হয়নি। আমি ভিক্ষে করেছি, চিৎকার করেছি, তবু দেওয়া হয়নি।’ চিকিৎসকের বক্তব্য, ‘জেলের পাশে মাঠের ঘাস পর্যন্ত খেয়েছি। সেটাকেই মনে হতো বার্গার, চিকেন, মাটন। খাবার-জল না পেয়ে আমি হ্যালুসিনেট করতে শুরু করে দিয়েছিলাম।’
আরজি কর আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে নাগরিক সমাজের উদ্দেশে কাফিল বলেন, ‘একটা সময়ে মনে হয়েছিল, বাঙালিরা প্রতিবাদ করতে ভুলে গিয়েছেন। যখন পার্ক স্ট্রিটের ঘটনা ঘটেছিল, সে সময়ে এমনটাই মনে হয়েছিল। কিন্তু আমাকে ভুল প্রমাণিত করে আরজি কর নিয়ে আপনারা যে আওয়াজ তুলেছেন, তা এখন গোটা দেশকে পথ দেখাচ্ছে।’ তাঁর মতে, ‘আমি চাইব, নির্যাতিতা যেন তাড়াতাড়ি বিচার পান। বিচারের জন্য আমার মতো তাঁকে যেন দীর্ঘ অপেক্ষা করতে না হয়।’
এ বারের সফরে বন্যাদুর্গত এলাকাতেও গিয়েছেন কাফিল। সেখানকার পরিস্থিতির কথাও এ দিন মহাজাতি সদনের ওই অনুষ্ঠানে জানান তিনি। তাঁর বইয়ের কয়েকটি চ্যাপ্টার নিয়ে শাহরুখ খান অভিনীত ‘জওয়ান’ ফিল্মটি তৈরি হয়েছে।
কাফিল বলছেন, ‘এত কিছুর পরেও এক বিজেপি নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরপ্রদেশ সরকার আমার নামে এফআইআর করে কেস দিয়েছে। ওদের মনে হয়, আমি শাহরুখ আর অ্যাটলি কুমার (ফিল্মটির পরিচালক) মিলে সরকার ফেলার জন্য মুভিটি বানিয়েছি।’ কী ভাবে তিনি আদালত থেকে বেকসুর মুক্ত হওয়ার পরেও তাঁর চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সে কথাও শুনিয়েছেন চিকিৎসক কাফিল খান।