শহর ছাড়িয়ে গ্রামেও প্রকোপ বাড়ছে ডেঙ্গির। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, রাজ্যে চলতি বছরের শুরু থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৮,৩০০ জন। এরমধ্যে ৬৩ শতাংশই গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা। গত বছর যা ছিল ৩১ শতাংশের মতো।গত ৫ বছরে এই প্রথম পুরসভার তুলনায় পঞ্চায়েত এলাকায় ডেঙ্গির পজি়টিভিটি রেট বেশি। যা স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তা বাড়িয়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। এই পরিস্থিতিতে কেন গ্রামীণ এলাকায় বাড়বাড়ন্ত ডেঙ্গির, তা জানতে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘রাজ্যে গত বছরের তুলনায় ডেঙ্গির প্রকোপ এখনও পর্যন্ত অনেকটাই কম। তবে, শহর ছাড়িয়ে গ্রামেও কেন ডেঙ্গি বাড়ছে, সেটা জানা জরুরি। কারণ না জানা গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করাটা সমস্যাজনক হবে।’

স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, র‍াজ্যের মধ্যে এই মুর্হূতে ডেঙ্গি আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদ (১,৮২০)। এরপরেই যথাক্রমে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা (১,০০১), মালদা (৯০৩), বাঁকুড়া (৬৯৪) এবং হুগলি (৮২১)।

কেন শহর ছাড়িয়ে গ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গি?
শহরেই মূলত বেশি পরিমাণ পাস্টিক ব্যাগ, প্লাস্টিকের কৌটো, বালতি, কাগজের কাপ, টিনের পাত্র যেখানে-সেখানে পড়ে থাকে। কিন্তু, নগরায়ণের জেরে এই সব জিনিসের ব্যবহার বাড়ছে গ্রামে। ফলে গ্রামেও এই সব জিনিস যেখানে সেখানে পড়ে থাকছে। গ্রামাঞ্চলে ক্রমশ বাড়ছে কুলার, ফ্রিজের ব্যবহারও।

বন্ধ বাড়ি ও ফাঁকা জমিতে বিশেষ নজর স্বাস্থ্য দপ্তরের
ফ্রিজ ও কুলারের ট্রেতে থাকা জল পাল্টানো হচ্ছে না। সেখানে জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। একই সঙ্গে ছাদে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত ফুলের টবেও জল জমছে। সেখানে দেদার জন্মাচ্ছে এডিস ইজিপ্টাই। এ ছাড়া, গ্রামের খারাপ রাস্তা থেকে শুরু করে অব্যবহৃত কুয়োও জমা জলের কেন্দ্র হয়ে উঠছে ক্রমশ।

পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘শহরের মতো গ্রামেও আবর্জনা স্তূপে জল জমছে। সেখানে জন্মাচ্ছে মশা’ থার্মোকলের প্লেট, বাটি, প্লাস্টিকের গ্লাস, কাগজের কাপ-সহ কোনও ধরনের পাত্রেই যাতে সাত দিনের বেশি জল না জমে, সে দিকে নজর দিতে হবে—এমনটাই বক্তব্য দেবাশিসের।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপক দাসের মতে, ‘লাগাতার প্রচারের ফলে শহরের মানুষকে কী কী কারণে ডেঙ্গি হয় তা অনেকটাই বোঝানো সম্ভব হয়েছে। তবে, গ্রামে এখনও সেই সচেতনতা তৈরি হয়নি। প্রশাসনের উচিত, সে দিকে নজর দেওয়া। না হলে রোগের বাড়বাড়ন্ত কমানো সম্ভব নয়।’

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা জানান, গ্রামে কী কারণে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত, তার খোঁজ করার জন্য জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের জানানো হয়েছে। প্রচারমূলক কর্মসূচির পাশাপাশি ডেঙ্গি রুখতে টেস্ট আরও বাড়ানোতেও জোর দেওয়া হয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version