এই সময়: গাড়ি থেকে দূষণ কতটা ছড়াচ্ছে, কার্বন নির্গমন কতটা হচ্ছে, তা মাপার সেরা পদ্ধতি হলো চলন্ত গাড়ি থেকে তা মাপা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতেই তা চেক করা হয়। ফলে দূষণের আসল ছবি পাওয়া যায় না। সেই নিয়মে বদল আনতে ২০০৯ সালে কলকাতা হাইকোর্ট এমন ব্যবস্থা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে চলন্ত গাড়ির কার্বন নির্গমন চিত্র পাওয়া যায়। এর পরে জাতীয় পরিবেশ আদালত এবং সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, গাড়ির দূষণ মাত্রা ছাড়ালেই এসএমএস যাবে মালিকের কাছে। এর জন্য রাস্তায় বসাতে হবে রিমোট সেন্সিং ডিভাইস (আরএসডি)।বিভিন্ন রাস্তায় আরএসডি বসানো হবে বলা হলেও, আদতে সেই সেন্সর বসেছিল মাত্র একটি। বর্তমানে সেটিও বন্ধ। অথচ কেনা হয়েছিল অনেকগুলি আরএসডি। এই মামলার শুনানিতে এক গুচ্ছ প্রশ্ন তুলে সংশ্লিষ্ঠ সব দপ্তরকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিয়ে জানাতে হবে, কেন এমন অবস্থা হলো?

আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এই ব্যবস্থা তৈরি হলে এক দিকে যেমন অভিযুক্ত গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে, তেমনই পরিববহণ দপ্তর এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ডেটা রেকর্ড করতে পারবে। তা হলে বোঝা যাবে কোন এলকায় কখন বাড়ছে দূষণের মাত্রা। পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত এই বিষয় নিয়ে মামলা করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, পরিবহণ দপ্তর একটি আরএসডি কিনেছিল। গত নভেম্বর থেকে সেটি বন্ধ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অবশ্য জানিয়েছে, রাজ্যে ২০টি আরএসডি চালু রয়েছে।

সুভাষ জানান, আরএসডি গাড়ির ধোঁয়ার সঙ্গে নির্গত কার্বন এবং পার্টিকুলেট ম্যাটার (দুষণ কণা) সঠিক ভাবে মাপতে সক্ষম। সুভাষ বলেন, ‘আমি গত কয়েক বছর ধের রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছি। কিন্তু একটির বেশি আরএসডি-র ব্যবস্থা করা যায়নি। আমাকে বলা হয়েছিল, সেই যন্ত্রের দাম অনেক।’

তাঁর অভিযোগ, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ দু’টি আরএসডি পরিবহণ দপ্তরকে দিলেও সেটির সংশ্লিষ্ট সংস্থা (যেমন ‘নিরি’) অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে চালু করা যাচ্ছে না। কেন্দ্রের নির্দেশ রয়েছে, আরএসডির সঙ্গে ‘বাহন’ পোর্টালের লিঙ্ক থাকবে। কোনও গাড়ি দূষণ বিধি ভাঙলে সেই গাড়ির বিস্তারিত তথ্য চলে আসবে। এবং সেন্ট্রাল সার্ভার হয়ে সেই মেসেজ পৌঁছে যাবে গাড়ির মালিকের কাছে।

জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চের বিচারপতি বি অমিত স্থালেকর এবং বিশেষজ্ঞ সসদ্য অরুণকুমার ভার্মা নির্দেশ দেন, সুভাষ যে অভিযোগগুলি তুলেছেন, তার সারবত্তা কতটা। যে আরএসিডি-গুলি কেনা হয়েছিল, সেগুলি কোথায় গেল? যদি আনা হয়েছিল, তা হলে কেন সেগুলি কাজে লাগানো হলো না? রাজ্য পরিবেশ দপ্তর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, রাজ্য পরিবহণ দপ্তর, কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রককেও এই বিষয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version