সঞ্জয় দে, দুর্গাপুর
দু’দিনের বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে গিয়েছিল দুর্গাপুর শহরের সিংহভাগ এলাকা। জল নামতে শুক্রবার সকালে এর কারণ খুঁজতে শহর ঘুরে দেখেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। দেখা গেল, শহরের অধিকাংশ নিকাশি নালায় আবর্জনা ও নির্মাণ সামগ্রী স্তূপ হয়ে রয়েছে। নির্মীয়মাণ বহুতল আবাসনের পাশে মজুত করে রাখা বালি, স্টোনচিপ্‌স বৃষ্টির জলে ভেসে গিয়ে জমা হচ্ছে নিকাশি নালায়। যার জেরে জল পাস হওয়ার রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ। এ ভাবেই নিকাশি নালা উপচে রাস্তা ও বাড়িতে জল ঢুকেছে।পুজোর ছুটির পর আগামী ২১ তারিখ, সোমবার পুরসভা খুললে এই সমস্যা নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন পুরসভার মুখ্য প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। রাস্তার ধারে নির্মাণ সামগ্রী মজুত করলে এ বার জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর রবীন্দ্র সরণিতে একটি বহুতল আবাসন তৈরি হচ্ছে। প্রায় পাঁচ মাস ধরে বৃষ্টি হলেই আবাসনের নির্মাণ সামগ্রী পাশের নিকাশি নালা ও রাস্তায় গিয়ে জমা হয়। এ দিন সকালেও দেখা গেল একই অবস্থা। ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রমাপ্রসাদ হালদারের বক্তব্য, ‘অনেকবার বলার পরেও প্রোমোটার কথা শোনেননি। নির্মাণ সামগ্রী সরানো না হলে আজ শনিবার থেকে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ নির্মাণ সামগ্রী মজুতের অভিযোগ মেনে নিয়ে প্রোমোটার সংস্থার কর্ণধার মনোজ বর্মা বলেন, ‘পাঁচিল না দেওয়া পর্যন্ত নির্মাণ সামগ্রী নালায় বা রাস্তায় ছড়াবেই। আমি সব পরিষ্কার করে দেবো।’

একই অবস্থা ফুলঝোড়-সহ আশপাশের এলাকায়। গত দু’দিন ধরে পুরসভার সাফাইকর্মীরা নিকাশি নালাগুলি পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখেন, সেখানে প্রচুর পরিমাণে আবর্জনা, প্লাস্টিক ও নির্মাণ সামগ্রী জমা হয়ে রয়েছে। কোথাও আবার জমে রয়েছে রাবিশ (কংক্রিটের টুকরো)। পুরসভার যে সব ইঞ্জিনিয়াররা জল জমার কারণ খুঁজতে বেরিয়েছিলেন তাঁদের একজন বলেন, ‘আবর্জনার সঙ্গে নির্মাণ সামগ্রী জমে থাকলে জল কোনও ভাবেই পাস হবে না। প্রায় প্রতিটি নিকাশি নালায় বালির সঙ্গে পাথর ভেসে এসেছে।’

একই কারণে নালা বন্ধ হয়ে গিয়ে নোংরা জল ঢুকে পড়েছে ফুলঝোড়ের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। জলে ভিজে নষ্ট হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। সেই সব কাগজ শুকনোর জন্য এ দিন কলেজের সামনে রাস্তার উপর পেতে রাখা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস অধিকারী বলেন, ‘নির্মাণ সামগ্রী কোথায় রাখা থাকবে তার উপর পুরসভার নজরদারি জরুরি। কুনুর নদীর সঙ্গে যুক্ত নালাগুলিও সংস্কারের প্রয়োজন। কারণ, নালার জল কুনুর নদীতে গিয়ে পড়ে।’

সিটি সেন্টারের ৬ নম্বর আলাউদ্দিন খাঁ রোডে রাস্তার ধারে বালি মজুত করা ছিল। এ দিন সকালে সেখানে গিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সে সব সরানোর ব্যবস্থা করেন অনিন্দিতা। তিনি বলেন, ‘সোমবার পুরসভায় নিকাশি বিভাগের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায়-সহ বর্তমান বোর্ডের কয়েকজনকে নিয়ে মিটিং করব। রাস্তার ধারে নির্মাণ সামগ্রী মজুত করলে জরিমানা করার ব্যবস্থা করা হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version