এই সময়: আন্দামান সাগরের উপর ঘণীভূত নিম্নচাপের জেরে বাংলার দিকে দ্রুত বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা। হাওয়া লাগামছাড়া হলে ভেঙে পড়তে মণ্ডপের বাঁশের কাঠামো। সেই আশঙ্কায় দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে দ্রুত মণ্ডপ খোলার নির্দেশ দিল কলকাতা পুরসভা। পুজোর সময়ে হোর্ডিং টাঙানোর জন্য যে বাঁশের কাঠামো করা হয়েছিল, সেগুলোকেও জরুরি ভিত্তিতে খুলে নিতে বলা হয়েছে।সেই মতো পুজো কমিটিগুলি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মণ্ডপ খোলার কাজে নেমে পড়েছে। কিন্তু হাতে বেশি সময় না থাকায় দুর্যোগ আসার আগে আদৌ মণ্ডপ খোলা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্তারা। কলকাতায় কালীপুজোর মণ্ডপ তৈরির কাজও চলছে। ফলে চিন্তা রয়েছে প্রশাসনের।

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য (উদ্যান) দেবাশিস কুমার এই সময়’কে জানিয়েছেন, ঝড়ে মণ্ডপ ভেঙে যাতে কারও ক্ষয়ক্ষতি না হয় তার জন্য পুজো কমিটিগুলিকে মণ্ডপের কাঠামো খুলে নিতে বলা হয়েছে। হোর্ডিং টাঙানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের স্ট্রাকচার বানানো হয়েছিল। কিছু জায়গায় সেটা এখনও রয়ে গিয়েছে। সেগুলিকে অবিলম্বে খুলে নিতে বলা হয়েছে।

উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, সাধারণত লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে মণ্ডপ খোলার কাজ শুরু হয়। একটা বড় মণ্ডপ খুলতে ১৫-২০ দিন সময় লাগে। ফলে অধিকাংশ পুজো মণ্ডপ এখনও খোলা হয়নি। এর মধ্যেই নির্দেশ চলে আসায় ফাঁপরে পড়েছেন তাঁরা। কারণ যাঁরা মণ্ডপের কাজ করেন, তাঁদের অনেকেই কালীপুজোর মণ্ডপ তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ আবার গ্রামে চলে গিয়েছেন। সেজন্য মণ্ডপ খুলতে দেরি হচ্ছে।

উত্তর কলকাতার কাশীবোস লেন পুজো কমিটির সম্পাদক সোমেন দত্ত জানিয়েছেন, মণ্ডপ বানানোর জন্য বড় বড় লোহার পাত বসানো হয়েছিল। ঝড়ের কথা ভেবে সেগুলো খুলে নেওয়া হয়েছে। মণ্ডপের বাইরের অংশে যে সব ত্রিপল লাগানো হয়েছিল সেগুলোও খুলে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পুজো শেষ হওয়ার ১৫-১৬ দিনের মধ্যে আমরা সাধারণত মাঠ হ্যান্ডওভার করে দিই। সেই মতো লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন থেকে মণ্ডপ খোলার কাজ শুরু হয়েছে। ঝড় হলেও আমাদের এখানে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম।’

পুজোর পরে ফেলে দেওয়া ফ্লেক্সে-ই ছাউনি দুর্গতদের

কেন্দুয়া শান্তিসংঘের অন্যতম কর্মকর্তা তথা স্থানীয় কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমাদের লোহার কাঠামো দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। সেটা বেশ মজুবত। ঝড়ে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা কম। মণ্ডপের আশপাশে কোনও বাড়িঘর নেই। ফলে ভেঙে পড়লেও কারও ক্ষতি হবে না।’

শিবমন্দির পুজো কমিটির কর্মকর্তা পার্থ ঘোষের বক্তব্য, ‘কলকাতা পুরসভা থেকে নির্দেশ আসার পর আমরা গেট এবং হোর্ডিংয়ের কাঠামোগুলো সব খুলে নিয়েছি। ত্রিপল, টিন নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বছর আমাদের লোহার প্যান্ডেল হয়েছে। লোহাগুলো কেটে কেটে নামাতে হচ্ছে। তাতে কিছুটা সময় লাগছে। ঝড়-বৃষ্টি হলে আমরা সেই কাজ বন্ধ রাখবো।’ নিউ আলিপুর সুরুচি সংঘের সম্পাদক স্বরূপ বিশ্বাস অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই মণ্ডপ খুলে নিয়েছেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version