বৈঠকে চালকল মালিকেরা এক কুইন্টাল ধান ভাঙাতে কত খরচ, তার হিসেব দেন। তাঁদের দাবি, এক কুইন্টাল ধান ভাঙাতে প্রত্যক্ষ খরচ ৯৩ টাকা। এর বাইরে পরোক্ষ খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে এক কুইন্টাল ধান থেকে সরকারকে ৬৮ কেজি চাল দিতে খরচ হয় ১১০-১৩০ টাকা। সেখানে কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে চালকল মালিকেরা সরকারের থেকে ৩০ টাকা পান।
ওই টাকায় সহায়ক মূল্যে ধান নিয়ে চাল দেওয়া কার্যত অসম্ভব। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মিলিং চার্জ বাড়ানোর জন্য নবান্নে ফাইল পাঠানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী সেই আর্জি মেনেছেন। চালকল মালিকদের প্রতিনিধিরা চুক্তিতে রাজি হয়েছেন।’
আলোচনা হয় শ্রমিকদের মজুরি সংক্রান্ত দাবি নিয়েও। চালকল মালিকদের দাবি, এক কুইন্টাল চালের জন্য ন্যূনতম ২০ টাকা মজুরি দরকার। সেখানে ২০১৬ সাল থেকে সরকারের বেঁধে দেওয়া ১২ টাকা মজুরি চলছে। পরিবহণ খরচ নিয়ে নতুন করে দরপত্র ডাকার দাবিতেও খাদ্য দপ্তরের কর্তারা সহমত হন। তবে সেই প্রক্রিয়া আগামী মরশুমে শুরু হবে বলে জানিয়েছে খাদ্য দপ্তর। চালকল মালিকদের মূল আপত্তি ছিল ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি নিয়ে।
আলোচনার পরে তাঁরা জানান, তাঁদের দাবি মেনে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির আড়াই গুণ পর্যন্ত পর্যন্ত ধান তাঁদের দেওয়া হবে। আগে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টিতে ১ কোটি টাকার ধান মিলত। এখন ৩৫ লক্ষ টাকার গ্যারান্টিতে মিলবে আড়াই কোটি টাকার ধান।
খাদ্য দপ্তরের দাবি, রাজ্যে ১১ লক্ষ টন চাল রাখার সুবিধে রয়েছে। রাজ্যে গণবণ্টন ব্যবস্থায় বা সরকারি সাহায্যের জন্য বছরে চালের প্রয়োজন হয় ৩০-৩৫ লক্ষ টন। পূর্ব বর্ধমানের ভাঙানো চাল রাজ্যের ৮টি জেলায় সরবরাহ করা হয়। গত বছর রাজ্যে ৫৮৫টি চালকল চুক্তি করেছিল, তার মধ্যে পূর্ব বর্ধমানেই ১০৩টি। এ বছর ৬৫৩টি চালকলের সঙ্গে চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে খাদ্য দপ্তর।