এই সময়, বর্ধমান: ২৪ অক্টোবর শুক্রবারের বিকেল। তখন বর্ধমান স্টেশনের ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে আপ ৩৭৮৩১ বর্ধমান-হাওড়া লোকাল। আরপিএফের এএসআই নরেন্দ্রনাথ দাস নিয়মমতো পরীক্ষা করে দেখছেন ট্রেনের কামরা। তখনই একটি কামরায় সিটের পাশে কালো ও ধূসর রংয়ের ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। মালিকের কোনও খোঁজ না পেয়ে তিনি ব্যাগ নিয়ে আরপিএফ অফিসে চলে আসেন। অফিসে ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, তাতে অন্য সামগ্রীর সঙ্গে রয়েছে বিপুল টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার।ওই দিনই সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৫টা নাগাদ বর্ধমানের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খালুইবিল মাঠের বাসিন্দা সোমা চৌধুরী আরপিএফ অফিসে এসে জানান, ট্রেনে তিনি একটি ব্যাগ ফেলে গিয়েছেন। কর্তব্যরত দুই মহিলা আরপিএফ কর্মী তাঁকে একটি ব্যাগ দেখান। সেই ব্যাগ খুলে সোমা দেখেন, ভিতরে থাকা সব কাগজই অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। রেলের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, মেমারি সাব-রেজিস্টার অফিসের স্ট্যাম্প ভেন্ডর সোমা খোয়া যাওয়া ব্যাগ ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। এমনকী আবেগে তিনি জড়িয়ে ধরেন কর্তব্যরত মহিলা আরপিএফ কর্মীকে।

কী ভাবে হারিয়ে গেল ব্যাগ? ঘটনার কথা জানাতে গিয়ে সোমা বলেন, ‘আমি মেমারি থেকে উঠেছিলাম। বর্ধমানে নামার পরে নিজের হ্যান্ডব্যাগ নিয়ে নেমে পড়ি। আমার পিঠে যে আরও একটি ব্যাগ রয়েছে সেটা ভুলেই গিয়েছিলাম। ওই ব্যাগে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপার, একটি স্ট্যাম্প প্যাড ও একটি চার্জার ছিল। বাড়ি ফিরে মনে পড়তেই বুঝতে পারি সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। তখনই ছুটে আসি এখানে।’

প্রথমে তিনি গিয়েছিলেন জিআরপি অফিসে। সেখান থেকে আরপিএফ অফিসে এসে নিজের ব্যাগ সমেত সমস্ত জিনিস তিনি ফেরত পান। তিনি বলেন, ‘ব্যাগটা আরপিএফের হাতে না পড়ে অন্যের হাতে পড়লে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় ছিল না। ওঁদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না, ওঁদের কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকলাম।’

সব তথ্য যাচাই করে সোমার হাতে ব্যাগ ফিরিয়ে দেন আরপিএফ আধিকারিকরা। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘রেলের পক্ষ থেকে অপারেশন আমানত প্রকল্পে এ ভাবে বহু যাত্রীর দামী ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ফেরত দেওয়া হয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে আরপিএফ এই কাজ করে যাচ্ছে। বর্ধমান স্টেশনে টহলরত ওই এএসআই-সহ আরপিএফ টিমকে আমরাও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version