অরূপ বসাক: রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে ট্রাফিক সিগন্যাল-সহ গাড়ির কাগজপত্র ঠিক না থাকলে গাড়িচালক সহ গাড়ি মালিকদের জরিমানা করা ট্রাফিক পুলিসের কাজ। মালবাজার শহর সহ বিভিন্ন এলাকাতেই আইন ভঙ্গকারীদের জরিমানা ধার্য করাটাই ট্রাফিক পুলিসের নিত্যদিনের কর্তব্য। আর এবার গাড়ির কাগজ ঠিক না থাকায় পুলিসের সরকারি গাড়িতেই জরিমানা ধার্য করতে কার্যত বাধ্য হলেন ট্রাফিক পুলিস কর্তারা।
ঘটনাটি ঘটেছে মালবাজার শহরে সুভাষ মোড় এলাকায়। রোজকার মতন এদিনও সুভাষ মোড় এলাকায় সকাল থেকেই কর্তব্যরত ছিলেন ট্রাফিক পুলিসের আধিকারিক সহ অন্যান্য কর্মীরা। সেই সময় বিন্নাগুড়ি থেকে একটি মারুতি গাড়িতে করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যাওয়ার সময় সামনে একটি বড় গাড়ি থাকায় সিগন্যাল ঠিকভাবে দেখতে পাননি চালক। আর তাতেই সিগন্যাল ভেঙে গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যান চালক। সিগন্যাল লাল থাকায় গাড়িও থামান চালক।
এরপরই গাড়িটিকে আটকায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিসের কর্মীরা। সুভাষ মোড় সংলগ্ন এলাকায় থাকার ট্রাফিক পুলিসের কিঅক্সে বসে তখন কর্তব্যরত আধিকারিক। গাড়িটিকে আটকে জরিমানা ধার্য করতে গেলেই সমস্যায় পড়তে হয় ট্রাফিক পুলিসকে। সিগন্যাল ভঙ্গকারী সেই মারুতি গাড়ি থেকে নেমে আসেন সেনাবাহিনীর হাসপাতালে কর্মরত রাজ মিশ্রা। প্রসঙ্গত তিনি জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ আইন ভঙ্গন করলে ও গাড়ির কাগজ যদি সঠিক না থাকে তার বিরুদ্ধে জরিমানা ধার্য করার অধিকার পুলিসের রয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন সুভাষ মোড় সংলগ্ন এলাকায় ট্রাফিক পুলিসের ব্যবহৃত সরকারি গাড়ির ইনসিওরেন্স আট বছর ধরে পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। সুতরাং সেই সরকারি গাড়িতেও জরিমানা ধার্য করতে হবে।
তাঁর তোলা এই প্রশ্নে কার্যত বিড়ম্বনায় পরেন ট্রাফিক পুলিসের কর্তব্যরত আধিকারিক ও কর্মীরা। পুলিসের সঙ্গে বাগবিতন্ডার মধ্যেই সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায় ওই এলাকায়। এরপর পুলিসের ব্যবহার করা ওই সরকারি গাড়িরও জরিমানা করা হয়। এই প্রসঙ্গে সামরিক বাহিনীর হাসপাতালে কর্মরত ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, আইনের উর্ধ্বে কেউই নয়। আইন সকলের জন্যই সমান। সরকারি গাড়ির কাগজের সমস্যা রয়েছে। পরবর্তীতে ট্রাফিক পুলিসের তরফে দুটি গাড়ির ক্ষেত্রেই জরিমানা ধার্য করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত এই বিষয়ে ট্রাফিক পুলিস সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রাস্তায় আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করাটাই রীতি। এক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে এদিনের সেনাবাহিনীর হাসপাতালে কর্তব্যরত ওই ব্যক্তির করা প্রতিবাদকে কুর্নিশ জানিয়েছেন ওই এলাকায় ভিড় জমানো অনেকেই। তবে কেউই ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে না চাইলেও ওই ব্যক্তির চ্যালেঞ্জে ট্রাফিক পুলিস যে বিরম্বনায় পড়েছিল বলেই মত সকলের। তবে বহু ক্ষেত্রেই বিভিন্ন দফতরে ব্যবহার করা সরকারি গাড়িগুলির কাগজপত্র সঠিক সময়ে পুনর্নবীকরণ করা হয় না তা এদিনের ঘটনা থেকেও পরিষ্কার বলেই মত স্থানীয়দের।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)