বিধান সরকার: চন্দননগর কলেজ নিজেই এক হেরিটেজ। তাকে সম্মান জানিয়ে স্পেশাল কভার খাম প্রকাশ করল ভারতীয় ডাক বিভাগ। চন্দননগর কলেজের সেমিনার হলে আজ এক অনুষ্ঠানে খাম প্রকাশ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন, পোস্টমাস্টার জেনারেল সাউথ বেঙ্গল রিজিয়ন ঋজু গাঙ্গুলী, কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিষ সরকার,মেয়র রাম চক্রবর্তী,ডেপুটি মেয়র মুন্না আগরওয়াল,হুগলি ডাক বিভাগের সিনিয়ার সুপারিন্টেন্ডেন্ট দেবরাজ শেঠি।
আরও পড়ুন: কথা বলতে পারেন না, কেবল বাঁশি বাজিয়েই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ! ‘স্বেচ্ছাশ্রম’ চন্দ্রনাথের…
হুগলি জেলার ঐতিহ্যবাহী চন্দননগর কলেজ (১৮৬২) ভারতবর্ষের শতাব্দীপ্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম। এই কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮৬২ সালের ৩১ আগস্ট, জেসুইট পাদ্রী এম ম্যাগলয়ের বার্থের তৈরি Ecole de Sainte Marie নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। যা লোকমুখে St. Mary’s Institution নামে পরিচিত ছিল। ১৮৮৭ সালের ডিসেম্বর মাসে চন্দননগরের ফরাসি কর্তৃপক্ষ যখন সরকারিভাবে এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।তখন এই প্রতিষ্ঠানের নাম আবার বদলে গিয়ে হয়েছিল Ecole Publique De Garcons। ১৯০১ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠান College Dupleix বা ডুপ্লে কলেজ নামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সংযোগের অভিযোগে, ব্রিটিশ সরকারের নিরন্তর চাপে তৎকালীন ফরাসি সরকার ১৯০৮-৩১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ২৩ বছরের জন্য কলেজ ডুপ্লে বন্ধ করে দিয়েছিল।
সারা ভারতবর্ষের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির ইতিহাসে এই ঘটনা বিরল। ১৯৩১ সালে যখন কলেজ পুনরায় খোলে, তখন এর নাম হয়েছিল College Dupleix: Section Anglaise : Course d’Intermediate। ১৯৩৮ সালে ফরাসি সরকারের শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পর।এটিকে আবার College Dupleix : Section d’Etudes Supérieures Franco-anglaises নামে পুনঃনামকরণ করা হয়। ১৯৪৫ সালে, কলেজটির নাম পুনরায় পরিবর্তন করে ‘কলেজ ডে-বুসি’ (College Debussy) রাখা হয়। অবশেষে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা এবং ১৯৪৯ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহারের পরে, যখন চন্দননগর একটি “মুক্ত শহর” হয়ে ওঠে। কলেজটি আনুষ্ঠানিকভাবে চন্দননগর কলেজে পরিণত হয়। যে নামটি আজও প্রচলিত রয়েছে। এই কলেজের শতাব্দীপ্রাচীন ‘হেরিটেজ বিল্ডিং’টি ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশনের দ্বারা ঐতিহাসিক মান্যতা লাভ করে। ২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর এই হেরিটেজ বিল্ডিং-এ স্থাপিত ‘চন্দননগর কলেজ মিউজিয়াম’টিও স্বল্পদিনের মধ্যেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সাম্প্রতিক সর্বভারতীয় মূল্যায়নের নিরিখেও চন্দননগর কলেজ সুনাম (ন্যাক গ্রেড-এ+) অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: হনুমানের মতই সাহসী, অজেয়! বাংলায় এই মন্দিরে পুজো পান নেতাজী…
কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রকের অধীনস্থ ভারতীয় ডাকবিভাগ এই কলেজকে সম্মান জানিয়ে আজ ২৩জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে একটি বিশেষ খাম বা ‘স্পেশাল কভার উইথ পিকটোরিয়াল ক্যানসেলেশন’ প্রকাশ করে। রাজ্যের শিক্ষামানচিত্রে এই প্রতিষ্ঠান চতুর্থ এবং সরকারি কলেজগুলির মধ্যে প্রথম এই বিশেষ সম্মান লাভ করল।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)