জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় (Kidnap & Rape Case) অভিযুক্ত নোবেলকে (Mainul Ahsan Noble) গ্রেফতার করেছে ঢাকার পুলিস (Dhaka Police)। নির্যাতিতা এক কলেজ ছাত্রী। পুলিসের তরফে জানানো হয়, ‘নোবেল, এক নারীকে সাত মাস একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করছিলেন। জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে কল পেয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে নোবেলকেও গ্রেফতার করা হয়’। মঙ্গলবার প্রথমে ঢাকা মহানগর পুলিসের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়। অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে ডেমরা থানায় করা মামলায় সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদের আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন- Chanchal Chowdhury: নুসরাতের পর টার্গেট চঞ্চল! গ্রেফতারির আতঙ্কে কলকাতা সফর বাতিল অভিনেতার?
নোবেলের জেল হেফাজতের পর মুখ খুলেছেন তার প্রাক্তন স্ত্রী সালসাবিল (Salsabil)। নেটপাড়ায় সালসাবিল লেখেন, ‘আমি বর্তমানে বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করছি। আমি কারও বিরুদ্ধে কোনো প্রকারের মামলা দায়ের করিনি। নোবেলের সঙ্গে আমার অনেক দিন দেখা হয় না ঠিক, কিন্তু ফোনে কথা হয়। আর অভিযোগ শুনলাম, সাত মাস ধরে নোবেল আটকে রেখে ধর্ষণ। আসলে ওর সঙ্গে সাত মাস কারও পক্ষে থাকা সম্ভব এটা আমার বিশ্বাস হয় না। কারণ ও নেশাগ্রস্ত, তাহলে সে কীভাবে কাউকে আটকে রাখবে?’
সালসাবিল আগেই দাবি করেছিলেন যে নোবেল মাদকাসক্ত। এই বিষয়ে প্রাক্তন স্ত্রী বলেন, ‘সে দীর্ঘদিন রিহ্যাবে ছিল। তারপর ছাড়া পেয়েছে। এরপর আমার সঙ্গে কথা হতো, কিন্তু ওর সঙ্গে যে কেউ থাকত সেটা আমি জানতাম না। যেহেতু মামলা হয়েছে, ধর্ষণের- এখন আদালতে প্রমাণ হবে সত্য-মিথ্যা, আমাকেও সেভাবে অপেক্ষা করতে হবে।’
একাধিক বিয়ে করেও আলোচনায় এসেছিলেন এ গায়ক। কিন্তু কোনো সংসারই স্থায়ী হয়নি। ২০১৯ সালে সালসাবিল মাহমুদকে বিয়ে করে আলোচনার সৃষ্টি করেন নোবেল। কিন্তু মাদক ত্যাগ না করায় সে সংসার টেকেনি। এরপর ২০২৩ সালের শেষে ফের নোবেলের বিয়ের খবর সামনে আসে। নির্যাতিতা প্রসঙ্গেও নোবেলের আইনজীবী দাবি করেছে যে এই নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন। তিনি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বাও। যদিও বিয়ের কাবিননামা দেখাতে পারেননি আইনজীবী।
উল্টোদিকে ওসি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা জানতে পেরেছেন, গত নভেম্বরে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে গুলশানে দেখা করার কথা বলে ডেকে নেন নোবেল। তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। পরে সাত মাস ডেমরার একটি বাড়িতে তাঁকে আটকে রাখেন নোবেল। এই সময় তিনি ছাত্রীকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন। এসব ঘটনা নিজের মোবাইলে ধারণ করেন। এই ভিডিও দিয়ে ছাত্রীকে তিনি ‘ব্ল্যাকমেল’ করছিলেন। সম্প্রতি নোবেল এক নারীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনে নামাচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় বলে উল্লেখ করেন ওসি মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ভিডিওতে থাকা নারীই এই ভুক্তভোগী ছাত্রী। ভিডিওটি দেখে ছাত্রীর মা–বাবা টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় এসে বিস্তারিত জানতে পারেন। পরে তাঁরা জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন করে ঘটনা জানান। গতকাল রাত ১০টার দিকে ডেমরার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তখন পুলিসের উপস্থিতি টের পেয়ে নোবেল পালিয়ে যান।
সোমবার রাত ২টোয় নোবেলকে ডেমরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান ওসি মাহমুদুর রহমান। পুলিসের দাবি, নোবেল সীমান্ত দিয়ে দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। এ জন্য তিনি একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছিলেন, তবে পালানোর আগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)