অয়ন ঘোষাল: জুনের শেষ দিকে প্রায় সমস্ত সবজি মধ্যবিত্তের মোটামুটি আয়ত্বের মধ্যে ছিল। জুলাইয়ের ১০ তারিখ তার অনেকগুলিই আয়ত্তের বাইরে। কলকাতার কোনও বাজারেই ৫০ টাকার নিচে কোনও সবজি নেই। যে চিচিঙ্গা সপ্তাহ দেড়েক আগে ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, গত সোমবার সেটাই ৫০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। নামের মধ্যে গুণ না থাকলেও বেগুন কার্যত ধরাছোঁয়ার বাইরে। জুলাইয়ের শুরুতে যে বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল সেই সাধারণ বেগুন এই মুহূর্তে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। একটু ভালো হলেই দাম পৌঁছচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকায়। বেস্ট কোয়ালিটির বেগুন ২০০ ছুঁই ছুঁই। আলু পেঁয়াজ রসুন কাঁচালঙ্কার মূল্য ও ঊর্ধ্বমুখী।

আরও পড়ুন:TMC Leader Murder: গু*লির পর অগুনতি কো*প, ভাঙড়ের মাটি এখনও রক্তে ভিজে! আটক ২, ফুঁসছেন শওকত…

কী বলছে সবজি বিক্রেতারা:
সবজি বিক্রেতাদের বক্তব্য, সম্প্রতি বিপুল বৃষ্টির জেরে কয়েকটি জেলায় চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আবার ১০ দিনের মহরমের জন্য অনেক মান্ডি বা আড়তে সবজির গাড়ি ঢোকেনি। ফলে শহরের বাজারে সবজির যোগানে ভাঁটা। আবার ক্রেতাদের একাংশ প্রতিবারই দাম বাড়লে অভিযোগ তোলে বিক্রেতাদের একাংশের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অকারণেই দাম কিছুটা চড়িয়ে দিচ্ছে। 

রাজ্য সরকারের মূল্য নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সপ্তাহে দু’দিন করে শহরের বিভিন্ন বাজারে হানা দিচ্ছেন। আজ শুক্রবার তাদের কলকাতা শহরের সব থেকে বড় পাইকারি বাজার কোলে মার্কেটে অভিযান চালানোর কথা। টাস্ক ফোর্সের সিনিয়র সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে মনে করছেন, জোগান কমেছে বর্ষার জন্য। সবজির মূল্যবৃদ্ধি তারই প্রভাবে। তবে কোথাও কোথাও যে অযথা দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে, তাও অস্বীকার করেনি টাস্ক ফোর্স। 

বাস্তব ছবি বলছে:
বর্ষাকালে সাধারণত সবজির দাম বাড়ে। কারণ এই সময় সবজি মূলত চাষের জমি থেকে সবজি মান্ডি যায়। সেখান থেকে হিমঘরে স্টোরেজ হয়। ফলে দাম একটু বাড়ে। আর এ বার বর্ষার শুরুতেই বাংলা ও ঝাড়খণ্ডে অতিবর্ষণের ফলে দুই মেদিনীপুর, হুগলি এবং হাওড়ার বেশ কিছু এলাকার বড় অংশের জমি চলে যায় জলের তলায়। প্রচুর সবজিতে পচন ধরে। আবার কিছু সবজি আধ কাঁচা অবস্থায় কৃষক জমি থেকে তুলে ফেলতে বাধ্য হন।

পাশাপাশি দুই ২৪ পরগনা, নদিয়াতেও অতি বৃষ্টিতে চাষের ব্যাপক ক্ষতিতে ফলন কমেছে এই বছর। এই ত্রিমুখী কারণে বাজারে সবজির যোগানে টান ধরেছে। খবর রাজ্যের কৃষি এবং উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে। এই তিন জেলা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সবজির সবচেয়ে বড় জোগানদার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, যোগানে ঘাটতি অথচ চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। এই কারণেই আশপাশের কিছু রাজ্য থেকে আনাজপাতি আমদানি করা হচ্ছে। যে কারণেও বাড়ছে দাম।

আরও পড়ুন:Bengal Weather Update: দিনভর গুমোট আবহাওয়া! রবি থেকে ফের বাড়বে বৃষ্টির দাপট, ভাসবে প্রায় সব জেলাই…

সবজির আকাশছোঁয়া দাম:

জুনের শেষে পটল ঢেঁড়শ ঝিঙে ছিল কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকা। এখন সেটাই ৫৫-৬০ টাকা। টোম্যাটো-শশা গত এক সপ্তাহে ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকায় পৌঁছেছে। কাঁচা লঙ্কার দর ৮০ টাকা থেকে পৌঁছেছে ১২০ টাকায়। রসুন দীর্ঘদিন ধরেই ১০০-১২০ টাকা কেজিতে বিকোচ্ছিল, এখন সেটাই ১৮০-২০০ টাকা। গত মঙ্গলবার শহরের কিছু বাজারে জ্যোতি আলুর দাম কেজিতে দু’টাকা বেড়ে হয়েছে ২২ টাকা। তবে সব কিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছে বেগুন।

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version