জি ২৪ ঘন্টা ডিজাটাল ব্যুরো: সাস্থ্যের খেয়াল রাখতে এখন মোটামুটি সবাই জিমে যান। ওজন কমাতে এবং শক্তি বাড়াতে কাজের ফাঁকে শরীরচর্চা করতে ভোলেননা অনেকেই। তবে এই জিম করতে গিয়েই সমস্যার মুখে পড়েন। অজান্তেই হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। দিন দিন এই সমস্যা বাড়ছে।
অনেকেই নিজের ক্ষমতার বায়েরে গিয়ে ওজন তোলেন যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এমন অনেকে আছেন যাঁরা কিছু না যেনেই ওয়ার্কআউট করেন। এই ওয়ার্কআউট করতে গিয়েই হার্ট অ্যাটাকের কবলে অনেকে পড়েন। ডাক্তারদের মতে যাঁরা জিমে শরীরচর্চা করেন তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন।
সঠিকভাবে ভারী ওজন না তুললে আমাদের রক্তের চাপ বেশী বেড়ে যেতে পারে। ভারী ওজন নিয়ে শরীরচর্চা করলে রক্তের চাপ বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে যদি কারোর হার্টের সমস্যা থেকে থাকে, তাঁদের সেইদিকে নজর দিতে হবে। অর্থপেডিক ডা. ওবাইদুর রেহমান জানান স্ক্রিনিং করানো খুবই জরুরি। তিনি জানান এমনও হয়েছে ট্রেডমিলে হাঁটতে হাঁটতে হার্ট অ্যাটাকের কবলে পড়েছেন এক যুবক। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। ময়নাতদন্তে জানা গেছে যে, সেই যুবকের হাইপারট্রপিক কার্ডিওমিওপ্যাথি ছিল। এই রোগ হলে হার্টের পেশী অস্বাভাবিক ভাবে মোটা হয়ে যায়। এই রোগ নিঃশ্বব্দে শরীরে বেড়ে ওঠে। ফলে সময়ের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। শরীরে কোনও লক্ষণ দেখা না দিলেও নিয়মিত স্ক্রিনিং করা আবশ্যক।
আপনার বয়স ৩০-এর বেশি হলে এবং তারই সঙ্গে পরিবারে কারোর হার্টের সমস্যা থাকলে, ডাক্তারের পরামর্শ আগে নেওয়া উচিত। এমনই ৫টি শারীরিক পরীক্ষা জিমে যাওয়া মানুষদের করানো উচিত।
ECG(ইলেক্টোকার্ডিওগ্রাম)
এই পরীক্ষা খুবই সাধারণ তবে খুবই কার্যকর একটি শারীরিক পরাক্ষা। এই পরীক্ষায় অ্যারিথমিয়াস ধরা পরে, পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণও ধরা পরে। এই পরীক্ষায় কোনও ব্যথ্যা হয় না, যা জিমে যাওয়া মানুযদের করানো উচিত।
2D Echo(ইকোকার্ডিওগ্রাফি)
এটি একটি আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা যা হৃদপিন্ডের আকাড় এবং কার্যকরিতা বোঝা যায়। এই পরীক্ষায় HCM,ভালভের ব্যাধি এবং নানা হার্টের সমস্যা দেখা যায়।
TMT( ট্রেডমিল টেস্ট অথবা স্ট্রেস টেস্ট)
এটি এমন একটি পরীক্ষা যা শারীরিক স্ট্রেসের মাধ্যমে করা হয়। এই পরীক্ষার সময় বলা হবে ট্রেডমিলে হাঁটতে এবং একইসঙ্গে হৃদপিন্ডের কার্যকরিতা মাপা হবে। এই পরীক্ষায় হার্টের ধমনী এবং রক্তের প্রবাহের অবস্থা বোঝা যায়।
ট্রপোনিন এবং NT-প্রোBNP
এটি একটি রক্ত পরীক্ষা যার ফলে হৃদপিন্ডের সমস্যা থাকলে তা বোঝা যায়। এই রোগের প্রাথমিক কোনও লক্ষণ না থাকলেও শরীরে নিঃশব্দে বেড়ে ওঠে।
hs-CRP এবং ESR(এরিথ্রোসাইটি সেডিমেনটেশন রেট)
এই পরীক্ষায় হার্টের প্রদাহ চিহ্নিত করা যায়। এই পরীক্ষায় উচ্চ লাইন থাকলে হার্টের রোগের ঝুঁকিও বেশি থাকে।
লিপিড প্রোফাইল এবং HbA1c
লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষায় কোলেস্টেরল এবং রক্তের শর্করার পরিমাণ মাপে। এই দুই রোগই হার্টের ক্ষতি করে। ফলে সময়ের আগে ধরা পড়লে ডায়েট এবং ওষুধের মাধ্যমে এই রোগ বাগে আনা সম্ভব।
ডা. রেহমান জানান এইসব পরীক্ষা করানো খুবই দরকার। জিমে যদি নাও যান, এই পরীক্ষা করাতে পারেন। এড়িয়ে না গিয়ে সময়ের আগে শরীরে নজর দিন। ডাক্তারের মতে ৩০-এর বেশি বয়স হলে এইসব পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া আবশ্যক।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)