অরূপ লাহা: স্থানীয়দের তৎপরতায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া শিশুকে কয়েক ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার করল বর্ধমান থানার পুলিশ। পাশাপাশি পুলিস শিশু চুরির ঘটনায় ২ অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম রিঙ্কি খাতুন ওরফে রুমকি খাতুন, বাড়ি বর্ধমানের বিজয়রামে। ধৃত অন্য মহিলার নাম মিনিরা বিবি। বাড়ি বর্ধমানের কেষ্টপুরে। সম্পর্কে এরা দু’জনে মা ও মেয়ে।

Add Zee News as a Preferred Source

শিশু চুরির ঘটনা জি ২৪ ঘন্টায় সম্প্রচারের পরই এলাকার বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় রিঙ্কি খাতুনের কোলে থাকা শিশুকে নিয়ে। প্রতিবেশী কয়েকজন বর্ধমানের খাগড়াগড়ের উত্তরপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে থাকা রিঙ্কি খাতুনের বাড়িতে যান। রিঙ্কি ও তার মা মিনিরা বিবি শিশুটিকে সদ্যোজাত বললেও তাদের সন্দেহ হয়। তখন তারা বর্ধমান থানায় খবর দেন। খবর পেয়েই বর্ধমান থানার পুলিস খাগড়াগড়ের উত্তরপাড়ায় গিয়ে চুরি যাওয়াকে শিশুকে উদ্ধার করে। 

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু চুরির অভিযোগে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ১৮ দিনের এক শিশুপুত্রকে হাসপাতাল চত্বর থেকে চুরি করে পালানোর অভিযোগ ওঠে এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার বিরুদ্ধে।

এদিন আউটডোরের শিশু বিভাগে মা সেলেফা খাতুন তার ১৮ দিনের শিশুপুত্রকে নিয়ে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তার মা হামিদা বিবি। শিশুটির বাবা সুজল সেখ তখন ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। সেলেফার নিজেরও  প্রসূতি চিকিৎসকের কাছে চেকআপ করার কথা থাকলেও, চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকায় চেক-আপ হয়নি। এরপর প্রসূতি বিভাগের বহিঃবিভাগের বারান্দায় সেলেফা খাতুন ও তার মা শিশুটিকে নিয়ে বসে ছিলেন। সেই সময়ই এক হলুদ রঙের চুড়িদার পরিহিত মহিলা তাদের কাছে এসে শিশুটিকে আদর করতে থাকেন এবং কিছুক্ষণ পর কোলেও নেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ওই মহিলা শিশুটিকে কোলে নিয়েই সেখান থেকে উধাও হয়ে যায়।

আরও পড়ুন-

বিষয়টি টের পেয়ে দিদিমা হামিদা বিবি তড়িঘড়ি জামাই সুজল সেখকে ফোন করে জানান। সুজল সেখ সঙ্গে সঙ্গে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিস ক্যাম্পে গিয়ে অভিযোগ করেন। এদের বাড়ি বীরভূমের কীর্ণাহারের বলরামপুরে। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতাল চত্বর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিস হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করে। 

এই ঘটনায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠে । খবর পেয়ে হাসপাতালে যান ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) দেবাশীষ চক্রবর্তী ও বর্ধমান থানার আইসি দিবেন্দু দাস। ধৃত রিঙ্কি খাতুনের প্রতিবেশী শেখ মেহের আলি বলেন, সন্ধ্যা ৫ টার সময় বাড়িতে ওই বাচ্চাটিকে নিয়ে আসে। এরা এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা নয়। মাস কয়েক আগে ভাড়া এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দা নাজমা খাতুন বলেন, আমরা বাচ্চা হয়েছে শুনে বাড়িতে দেখতে যায়। রিঙ্কি খাতুন ও তার মা মিনিরা বিবি বলে আজ দুপুর ১২ টার সময় বাচ্চা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আমি বর্ধমান মেডিকেল কলেজের নার্সিং বিভাগে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। বাচ্চাটি দেখে আমার সন্দেহ হয়। একদিনের বাচ্চা কি করে এতবড় হয়। তাছাড়া হাসপাতাল থেকেও এত তাড়াতাড়ি ছুটি দেবে না। একই রকম সন্দেহ হয় প্রতিবেশী রেবিনা বিবিরও। এরপরই গোটা বিষয়টি নিয়ে পাড়ায় হৈচৈ শুরু হয়। খবর দেওয়া হয় বর্ধমান থানায়। খবর পেয়েই পুলিস যায়। বাচ্চা ও দুই মহিলা মা ও মেয়েকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা ভেঙে পড়ে ও আসল ঘটনা বলে যে তারা শিশুটিকে চুরি করেছে। এরপরই পুলিস রিঙ্কি খাতুন ওরফে রুমকি খাতুন ও তার মা মিনিরা বিবিকে গ্রেফতার করে। মিনিরা বিবি এলাকায় পরিচারিকার কাজ করে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পাশাপাশি শিশুটিকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয় রাতে।বুধবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হবে।

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version