চম্পক দত্ত: একাধিক কর্মসূচি নিয়ে শনিবার ঘাটালে (Ghatal) এলেন সাংসদ তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী (Dev)। ঘাটাল উৎসব ও শিশু মেলা কমিটি গঠন থেকে শুরু করে বহু প্রতীক্ষিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান মনিটরিং কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন তিনি। এই বৈঠক থেকেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে জমিদাতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝানোর বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন সাংসদ দেব।
বন্যা মিটতেই এবার জোরকদমে শুরু হবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ। ঘাটাল শহরে শিলাবতী নদীর উপর গার্ডওয়াল নির্মাণ এবং মাস্টার প্ল্যানের অধীনে একাধিক নতুন ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। এদিন দুপুরে ঘাটাল টাউন হলে মনিটরিং কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন সাংসদ। তিনি স্পষ্ট জানান, ঘাটালের মানুষকে ছাড়া এই মাস্টার প্ল্যানের কাজ দ্রুত শেষ করা সম্ভব নয়।
এ বছর ছ’বার বন্যার কারণে কাজ অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে স্বীকার করে নিয়ে দেব বলেন, “এবার জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কতটা প্রয়োজন, তা ঘাটালের মানুষ জানেন। যাঁরা ইতিমধ্যে জমি দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।”
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, এখনও যেসব জমিদাতা জমি দিতে ইতস্তত করছেন, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজে বোঝানোর দায়িত্ব নিলেন দেব। মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, “এখনও যারা জমি দিতে ভয় পাচ্ছেন বা আমরা হয়তো তাদের সঠিক ভাবে বোঝাতে পারিনি। দরকার হলে এবার আমি তাদের কাছে যাব, আমি গেলে তারা যদি আশ্বস্ত হয় বোঝাতে পারি, তাহলে কাজটা দ্রুততার সাথে শেষ করা যাবে।”
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই শেষ হবে বলেও আশাবাদী সাংসদ। মনিটরিং কমিটির বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, “ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে। যেখানে যেখানে গার্ডওয়াল তৈরি হবে, সেসব জায়গাও মার্কিং হয়ে গিয়েছে, তার জন্য অনেকগুলো জমি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। অনেকগুলো ব্রিজ তৈরি হবে, তার জন্য সয়েল টেস্ট হয়ে গিয়েছে, দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। আমরা আশাবাদী, দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যা কথা দিয়েছেন সেই সময় মতোই কাজ শেষ হবে।”
উল্লেখ্য, ঘাটাল শহরে শিলাবতী নদীর উপর গার্ডওয়াল তৈরির কাজ জমি জটের কারণে থমকে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রুট কাটছাঁট করে জমি ম্যাপিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এবার জমি জট পুরোপুরি কাটাতে দেবের এই ব্যক্তিগত উদ্যোগ মাস্টার প্ল্যানের কাজকে গতি দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার কড়া জবাবও দেন সাংসদ দেব। তিনি বলেন, “বিরোধীরা যা বলছে, তারা তাদের জায়গা থেকে হয়তো ঠিক, কারণ বিরোধিতা না করলে তারা তো বিরোধী থাকবে না। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কোনও রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা নয়, এটা ঘাটালের মানুষের জন্য।” তিনি আরও বলেন, “কাজ সম্পন্ন হলে আমি নিজে বিরোধী সবাইকে ফোন করে ডেকে নেব সেলিব্রেট করার জন্য, কারণ তারাও তো সবাই ঘাটালের মানুষ।”
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ছাড়াও এদিন দেব ঘাটাল অরবিন্দ স্টেডিয়ামে ‘ঘাটাল উৎসব ও শিশু মেলা’র কমিটি গঠন নিয়ে বৈঠক করেন। তবে গত বছরের বৈঠকের মতো এবার কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও তিনি দলীয় বিজয়া সম্মিলনী ও একটি কালী পুজোর উদ্বোধনে যোগ দেন। সাংসদের এই দিনের কর্মসূচিগুলির মধ্যে ঘাটাল উৎসব ও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে তাঁর বার্তা সবার নজর কেড়েছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)