চিত্তরঞ্জন দাস: দুর্গাপুর বেসরকারী মেডিক্যাল (Durgapur Medical College Incident) কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ছয় অভিযুক্তকে নিয়ে তদন্ত আরও এক ধাপ এগোল। সহপাঠী-অভিযুক্ত ছাড়া বাকি পাঁচজনের মুখোমুখি টিআই (Test Identification) প্যারেড করা হল দুর্গাপুর মহকুমা উপ-সংশোধনাগারে (Durgapur Magistrate Court)।
এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল বিচারকের উপস্থিতিতে, যাতে নিগৃহিতার বয়ান ও শনাক্তকরণ আইনি দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ বৈধতা পায়। শুক্রবার দুপুর ঠিক বারোটার সময় দিকে নির্যাতিতা চিকিৎসক ছাত্রীকে দুর্গাপুর মহকুমা উপ-সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হয় টিআই প্যারেডের জন্য। সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা। নিরাপত্তা ছিল কড়া। ছিলেন অতিরিক্ত জেলা বিচারক রাজীব সরকার এবং এই মামলার তদন্তকারী অফিসার (আইও)। ১২টা থেকে ১:৩০ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলে। বিচারকের তত্ত্বাবধানেই টিআই প্যারেডের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল। অভিযুক্তদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ধর্ষিতা চিকিৎসক ছাত্রী কাদের চিহ্নিত করেছেন, সেটিই এখন তদন্তের মূল চাবিকাঠি।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়াকে ‘গণধর্ষণে’র ঘটনায় বুধবার ৪ অভিযুক্তকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছিল ৷ তবে, পুলিশসের তরফে ধৃতদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয়নি ৷ পুলিস সূত্রে খবর, আদালত এই চারজনকে জেল হেফাজতে পাঠালে, সেখানেই টিআই প্যারেডের ব্যবস্থা করা হতে পারে বলে জানিয়েছিল ৷ এর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে ৷
উল্লেখ্য, দুর্গাপুর ধর্ষণ-কাণ্ডে মঙ্গলবার দুই অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়েছিল ৷ সেখানে বিচারক তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠান ৷ এরপর এ দিন নির্যাতিতার সহপাঠী তথা প্রেমিক-সহ ৪ অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয় ৷ উল্লেখ্য, দুর্গাপুর ধর্ষণ-কাণ্ডে প্রথমে শেখ রিয়াজউদ্দিন এবং শফিক শেখকে গ্রেফতার করে পুলিস ৷ তার পরেরদিন শেখ ফিরদৌস, শেখ নাসিরউদ্দিন এবং অপু বাউড়ি নামে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয় ৷
ওই দিন রাতেই নির্যাতিতার সহপাঠীকে গ্রেফতার করা হয় ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৷ উল্লেখ্য, ধৃত শেখ রিয়াজউদ্দিন, শফিক শেখ, শেখ ফিরদৌস, শেখ নাসিরউদ্দিন এবং অপু বাউড়ি দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পাশে বিজড়া গ্রামের বাসিন্দা ৷
পুলিস সূত্রে খবর, ধৃতদের জেল হেফাজতে পাঠানো হলে, টিআই প্যারেডের পরিকল্পনা রয়েছে তদন্তকারীদের ৷ এর জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে পুলিস ৷ এ নিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা বলেন, ‘আমরা আজ চারজনকে আদালতে পাঠিয়েছি ৷ এর পাশাপাশি টিআই প্যারেডের জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে ৷’
উল্লেখ্য, নির্যাতিতা পুলিসকে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছিলেন, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন ৷ বাকি ৪ অভিযুক্ত এবং নির্যাতিতার সহপাঠী তথা প্রেমিকের কী ভূমিকা ছিল, তা সরকারিভাবে নথিভুক্ত করতে চাইছেন তদন্তকারীরা ৷ এর জন্য টিআই প্যারেডের আবেদন জানানো হয়েছিল ৷ আদালতের অনুমতি মিললে, জেলের ভিতরেই তা করা হবে বলে পুলিস সূত্রে খবর ছিল ৷
মূলত, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নির্যাতিতা চিকিৎসক তাঁর বয়ান অনুযায়ী, ধর্ষককে চিহ্নিত করেছে ৷ পাশাপাশি, ঘটনার সময় কারা কখন সেখানে উপস্থিত হয়েছিল, বাকিদের কার কী ভূমিকা ছিল, সেই সবটা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জানিয়েছে নির্যাতিতা ৷ এই পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে ৷
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)