রণজয় সিংহ: মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) ভোপালের (Bhopal) সঙ্গে জড়িয়ে গেল মালদার নাম (Malda)। কার্বাইড গান বিস্ফোরণে দৃষ্টিহীন হতে চলেছে বেশ কিছু শিশু‌ ও তরুণ। মালদা জেলার এমন আট তরুণ ও কিশোরের সন্ধান মিলল যারা কার্বাইড গানের বিস্ফোরণে দৃষ্টি হারাতে বসেছে। যা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন জেলার বিশিষ্ট চক্ষু চিকিৎসকরা। 

Add Zee News as a Preferred Source

আরও পড়ুন: China Builds Air Defence Site Near India: ভারতের একেবারে ঘাড়ের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি কেন গড়ল চিন! ভয়ংকর টেনশনে দেশ?

হাত থেকে চোখে

মালদার চক্ষু-চিকিৎসক সৌগত পোদ্দারের কাছে দুইজনের চিকিৎসা চলছে। ওই চিকিৎসক ঠিক কী বলছে? শুক্রবার মালদা শহরের খ্যাতনামা চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেবদাস মুখার্জির কাছে চোখ দেখাতে এসেছিল বছর ১৩-র কিশোর আকাশ বিশ্বাস। তার বাড়ি গাজোলের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। হবিবপুর থেকে একইভাবে আহত বছর ২০-র তরুণ কিশোর বিশ্বাস। কীভাবে চোখে আঘাত পেয়েছে তারা?  কিশোর বিশ্বাস জানান, তাদের গ্রামেরই একটি ছেলে সেই কার্বাইড গান তৈরি করেছিল। তাতে আগুন ধরে যায়। নেভানোর সময় হাত লেগে যায় কার্বাইডে। ‌ ভুলবশত সেই হাত চোখে লাগে। তারপর থেকেই সমস্যা বেড়ে যায়। এখন চোখে ঝাপসা দেখছি।’ 

অ্যাসিটিলিন

মালদা শহরের আরেক চক্ষু চিকিৎসক অমিতেন্দু সাহা জানান, ‘ক্যালসিয়াম কার্বাইড আর জলের বিক্রিয়ায় তৈরি হয় দাহ্য গ্যাস অ্যাসিটিলিন। তার জেরেই বিস্ফোরণ ঘটছে। আর তা চোখে গেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দৃষ্টি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আনন্দ থেকে আর্তনাদে

কেন ভোপালের সঙ্গে জড়াল মালদার নাম? দীপাবলিতে ভোপালের আনন্দ বদলে গিয়েছিল আর্তনাদে। দীপাবলিতে শব্দবাজি নিষিদ্ধ থাকলেও সেই বারণ কেউ মানেনি। সঙ্গে দেদার বিকিয়েছে এবার কার্বাইড গান। ৫-১৫ সব বাচ্চার আনন্দের উত্‍স ছিল কার্বাইড গান। আর এই ক্যালসিয়াম কার্বাইড গানের আঘাতে প্রাথমিক ভাবে ১৫০-রও বেশি মানুষ আহত হয়েছিলেন। এখন সংখ্যাটা ৩০০-র ঘরে! বেশ কয়েকজন রোগীর চোখের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। কারও দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়েছে। কারও আবার মুখ পুড়ে গিয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। দীপাবলিতে রমরমিয়ে এই খেলনা বন্দুক বিক্রি হচ্ছিল। যদিও ১৮ অক্টোবর কার্বাইড গান ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার।

আরও পড়ুন: Tomato Price Rise: অ্যাঁ? ১ কেজি টমেটোর দাম ৬০০ টাকা? কেন টমেটোর দাম ৪০০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেল? অবিশ্বাস্য…

বিপজ্জনক বন্দুক 

ক্যালসিয়াম কার্বাইড, প্লাস্টিকের পাইপ এবং একটি গ্যাস লাইটার দিয়ে তৈরি এই বন্দুকটি এবার ভোপালে খুবই জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু কেউ এর পিছনের বিপদটি  বুঝতে পারেননি। কার্বাইডটি জলের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে এটি অ্যাসিটিলিন গ্যাস তৈরি করে এবং একটি স্ফুলিঙ্গ বিস্ফোরণ ঘটায়। ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া কার্বাইড গান দেখতে খেলনার মতো হলেও এতে ভালোই বিস্ফোরণ ঘটে। এর আওয়াজ বিকট।

রেটিনা পুড়ে যাওয়া

ভোপাল, ইন্দোর, জব্বলপুর এবং গোয়ালিয়রের হাসপাতাল জুড়ে, চক্ষু চিকিৎসার ওয়ার্ডগুলিতে এই বন্দুকের আঘাতে আহত অনেক শিশুর চিকিৎসা চলছে। শুধুমাত্র ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালেই ৭২ ঘণ্টায় ২৬ জন শিশু ভর্তি হয়েছিল। ডাক্তাররা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় অভিভাবকদের সতর্ক করছেন। বলেছেন,এ কোনও খেলনা নয়, বরং একটি ইম্প্রোভাইজড বিস্ফোরক। হামিদিয়া হাসপাতালের সিএমএইচও মনীশ শর্মা বলেন, এটি চোখের সরাসরি ক্ষতি করে। বিস্ফোরণের ফলে ধাতব টুকরো এবং কার্বাইডের বাষ্প নির্গত হয় যা রেটিনা পুড়িয়ে দেয়। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে চিকিৎসায় দেখা যাচ্ছে যেখানে শিশুদের চোখের পিউপিল ফেটে যায়, যার ফলে স্থায়ী অন্ধত্ব হয়।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version