জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ১৯ নভেম্বর ২০২৩। রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) টিম ইন্ডিয়া ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও ফিনিশিং লাইন টপকাতে পারেনি। আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ক্যাঙারু কাঁটায় বিদ্ধ হয়েছিল ভারতের কাপ স্বপ্ন। শেষ হাসি হেসেছিল সেই মহাশক্তিধর অস্ট্রেলিয়া। ২ নভেম্বর ২০২৫, প্রায় দু’বছর পর রোহিতদের অধরা মাধুরীই ছুঁয়ে দেখালেন হরমনপ্রীত কৌররা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে, কাপ হাতে তুলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত (India vs South Africa, ICC Women’s World Cup Final 2025)। ২০০৫ এবং ২০১৭ সালে মিতালি রাজের ভারত ফাইনালে উঠেও ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু এবার সব হিসেব বদলে ইতিহাস লিখলেন হরমনপ্রীতরা। প্রথমবারের ভারতের মেয়েরা বিশ্বকাপ জিতল। নবী মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্পোর্টস অ্যাকাডেমির সুবজ ঘাস সাক্ষী থাকল নীল ইতিহাসের…
আরও পড়ুন: এভাবেও ফিরে আসা যায়! রেকর্ড করে সিরিজে ফিরল ভারত, অনবদ্য অর্শদীপ-ওয়াশিংটন…
ভারতের ইনিংস
মুম্বইয়ে বৃষ্টির কারণে দুপুর আড়াইটেতে টসের কথা থাকলেও সেই টস প্রায় দু’ঘণ্টা দেরিতে হয়েছে। বৃষ্টি ভেজা মাঠে টস জিতে উলভার্ট ফিল্ডিংয় করার সিদ্ধান্ত নেন। ভারত ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করে। ফাইনাল সুলভ সূচনা যাকে বলে। ওপেনিং জুটিতে স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মা ১৭.৪ ওভারে তুলেছিলেন ১০৪ রান। ৫৮ বলে ৮ চার হাঁকিয়ে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়ে যান স্মৃতি। এরপর শেফালির হাত শক্ত করতে আসেন সেমিফাইনালের ‘শেরনি’ জেমিমা রড্রিগজ। এরপর ২৮ ওভারে ফেরেন শেফালি। দেশের মারকুটে ওপেনার দুরন্ত ছন্দে ছিলেন। মাত্র ১৩ রানের জন্য ঐতিহাসিক মঞ্চে সেঞ্চুরি ফেলে আসেন! শেফালি এদিন ৭৮ বলে ৮৭ রানের ইনিংস সাজিয়ে ছিলেন ৭ চার ও ২ ছয়ে। শেফালির ফেরার ঠিক পরে পরেই জেমিমাও আউট হয়ে যান। ‘বড়’ রাতে তিনি জ্বলে উঠতে পারেননি। ৩৭ বলে ২৪ রান করে আউট হন জেমিমা। ৩০ ওভারের ভিতর ভারত তিন উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান তোলে। এরপর হরমনপ্রীতের উপর সকলের ভরসা ছিল। তবে মিডল অর্ডারের তারকা ফাইনালে মাত্র ২০ রান করে বোল্ড হয়ে যান। তবে পাঁচে নেমে দীপ্তি শর্মা (৫৮ বলে ৫৮) ও সাতে নামা রিচা ঘোষ (২৪ বলে ৩৪) জ্বলে ওঠেন। তাঁদের সুবাদেই ভারত নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ২৯৮ রান তুলতে পেরেছিল। তিনশোর উপর স্কোর হয়েই যেত। কিন্তু অল্পের জন্য তা আর হয়নি। ছয়ে নেমে অমনজোত কৌরও মাত্র ১২ রান করেই ফিরে গিয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার আয়াবোঙ্গা খাখা এদিন ৩ উইকেট নিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস
২৯৯ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ক্যাপ্টেন উলভার্ট এবং টাজমিন ব্রিটস। ৯.৩ ওভারে ব্রিটস রানআউট হয়ে যান। ৩৫ বলে ২৩ করে ফেরেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা ৫১ রানে প্রথম উইকেট হারায়। উলভার্ট একটা প্রান্ত ধরে রাখলেও টপ অর্ডারের আনেকে বস (০) ও সানে লুস (৩১ বলে ২৫) ফিরে যান। এমনকী প্রোটিয়া স্টার মারিজেন ক্যাপকেও ভারত ৪ রানে ফিরিয়ে দেয়। ২৩ ওভারের ভিতর ১২৩ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার চার উইকেট তুলে নিয়ে ভারত বেশ চাপে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু উলভার্ট একা কুম্ভ আগলে লড়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর হাত শক্ত করতে আসা শিনালো জাফটাও দ্রুত ফিরে যান। ২৯ বলে ১৬ রান যোগ করেছিলেন তিনি। আনেরি ডার্কসেনও ভালোই জমে গিয়েছিলেন ক্রিজে। কিন্তু তাঁকেও বেশিক্ষণ থাকতে দিলেন না হরমনপ্রীতরা। ৩৭ বলে ৩৫ করে আউট হয়ে যান। তবে ভারত চরম স্বস্তি পায় যখন ফিরে যান উলভার্ট। ৯৮ বলে ১০১ রান করে আউট হয়ে যান প্রোটিয়া নেত্রী। উলভার্টের পর ভারত ফিরিয়ে দেয় ক্লো ট্রায়নকে (৮ বলে ৯)। দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ উইকেট যখন হারিয়ে ফেলে তখন তাদের টার্গেট দাঁড়ায় ৫০ বলে ৭৮। এই অবস্থাতেও ভারতের হতশ্রী ফিল্ডিং অব্যাহত ছিল। ক্যাচ মিস, ফিল্ডিং মিস! কিছুই বাকি ছিল না। পুরো কাপ জুড়েই যা ভারত দেখিয়েছে। এমন দিনে ভারতের থেকে সেরা ফিল্ডিং ভীষণ ভাবে প্রয়োজন ছিল। তবে আয়াবোঙ্গা খাখা রানআউট হতেই ভারতের হাসি চওড়া হয়। ৩০ বলে যখন দক্ষিণ আফ্রিকার ৫৩ রান বাকি ছিল, তখনই চলে যায় ৯ উইকেট। তবে ক্রিকেট বিধাতা ট্রফি ভারতের নামেই লিখে রেখেছিল। রোহিতের সামনেই হরমনপ্রীতরা ৫২ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইতিহাস লিখল।
আরও পড়ুন: শাহরুখের জন্মদিনে KKR-এ ব্লকবাস্টার এন্ট্রি, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিজয়ী সুপারস্টারই কলকাতার নেতা!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
