জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রয়াত ধর্মেন্দ্রের (Dharmendra) অসংখ্য ভক্তরা যখন তাঁর শেষ বিদায়ে তাঁকে একবার দেখার অপেক্ষা করছিলেন, ঠিক তখনই সামনে এল নতুন তথ্য। পরিচালক হামাদ আল রেয়ামি তাঁর সঙ্গে হেমা মালিনীর (Hema Malini) সাম্প্রতিক কথোপকথনের কিছু বিবরণ দিয়েছেন। হেমা তাঁকে জানান যে অভিনেতার শেষ দিনগুলো ছিল গভীর কষ্টের—যা পরিবার কোনোভাবেই বাইরের দুনিয়াকে দেখাতে চায়নি।
চলচ্চিত্র নির্মাতা হামাদ আল রেয়ামি তাঁর ইনস্টাগ্রামে শোকের সময় হেমা মালিনীর সঙ্গে দেখা হওয়ার বিষয়ে একটি পোস্ট করেছেন। সেই নোটে তিনি প্রকাশ করেন, কীভাবে হেমা মালিনী অকপটে ধর্মেন্দ্রের শেষ মুহূর্ত এবং কেন পরিবার শেষকৃত্যকে ছোট ও ব্যক্তিগত রেখেছিল, সেই বিষয়ে কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন- Samantha Wedding Photo: রাজের সঙ্গে বয়সের ফারাক নিয়ে চর্চা! বিয়ের ছবি শেয়ার করে সামান্থা লিখলেন…
হামাদ তাঁর সঙ্গে হেমা মালিনীর একটি ছবি শেয়ার করে আরবিতে লেখেন (যার মোটামুটি অনুবাদ হলো): তিনি শোকের তৃতীয় দিনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন এবং তাঁদের কথোপকথনের সময় আবেগি হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। তিনি জানান, কথা বলার সময় হেমার চোখেমুখে তিনি “ভেতরের অস্থিরতা” দেখতে পেয়েছিলেন। হামাদের বর্ণনা অনুযায়ী, হেমা মালিনী কাঁপা কণ্ঠে তাঁকে বলেছিলেন: “আমি যদি দু’মাস আগে ধর্মেন্দ্রের সঙ্গে সেই খামারবাড়িতেই থাকতাম, যেদিন আমি তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলাম…আমি যদি তাঁকে সেখানেই দেখতাম।”
তিনি আরও মনে করিয়ে দেন যে কীভাবে তিনি তাঁর স্বামীকে তাঁর কবিতা ও ভাবনাগুলি প্রকাশ করার জন্য বারবার অনুরোধ করতেন। হামাদ মনে করে লেখেন, ধর্মেন্দ্র তাঁকে বলতেন, “এখন নয়… আমাকে আগে আরও কিছু কবিতা শেষ করতে দাও।” এরপরই হামাদ যোগ করেন, “কিন্তু সময় তাঁকে রেহাই দিল না, এবং তিনি চলে গেলেন…”
হামাদ আরও লেখেন যে হেমা তাঁর স্বামীর ব্যক্তিগত লেখাগুলি জনসাধারণের কাছে পৌঁছাতে না পারায় গভীর আফসোস প্রকাশ করেছেন। হেমার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, “এখন তো অপরিচিতরা আসবে…তারা তাঁকে নিয়ে লিখবে, বই রচনা করবে…অথচ তাঁর নিজের লেখাগুলি কখনোই দিনের আলো দেখল না।”
কেন গোপন রাখা হয়েছিল ধর্মেন্দ্রের শেষকৃত্য? হেমা মালিনী শেষকৃত্যকে শুধুমাত্র ঘনিষ্ঠ পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার এই বহু-আলোচিত সিদ্ধান্তের কারণটি খোলসা করেছেন। তিনি নাকি তাঁকে বলেছিলেন। “ধর্মেন্দ্র, তাঁর সারা জীবন, কখনোই কাউকে দেখতে দেননি যে তিনি দুর্বল বা অসুস্থ। এমনকি তিনি তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের কাছ থেকেও নিজের কষ্ট লুকিয়ে রাখতেন। আর একজন মানুষ মারা যাওয়ার পর, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকে পরিবারের।”
আরও পড়ুন- Ankita-Prantik: ১২ বছরের বন্ধুতা, ২ বছরের বিয়ে…সম্পর্কে ভাঙন প্রান্তিক-অঙ্কিতার!
এই কথোপকথনের কথা বলতে গিয়ে হামাদ লিখেছেন, হেমা এক মুহূর্ত থামলেন এবং তারপর বললেন, “তবে যা ঘটেছে, তা একরকমের মুক্তি কারণ, তুমি তাঁকে সেই অবস্থায় দেখতে পারতে না। তাঁর শেষ দিনগুলির অবস্থা ছিল যন্ত্রণাদায়ক এবং আমরাও তাঁকে সেভাবে দেখতে খুব কষ্টে ছিলাম।”
প্রসঙ্গত, ধর্মেন্দ্র ৮৯ বছর বয়সে, তাঁর ৯০ তম জন্মদিনের ঠিক কয়েক সপ্তাহ আগে, গত ২৪ নভেম্বর প্রয়াত হন। তিনি বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন এবং ১০ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি বাড়িতে ফিরে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর শেষকৃত্য ২৫ নভেম্বর মুম্বইয়ে সম্পন্ন হয়, যেখানে অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, সলমান খান, আমির খান এবং সেলিম খানের মতো ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। গত সপ্তাহে দেওল পরিবার একটি শোকসভার আয়োজন করেন যার নাম দেওয়া হয় ‘সেলিব্রেশন অফ লাইফ’, যেখানে রেখা, ঐশ্বর্য রাই, সালমান খান এবং শাহরুখ খানের মতো প্রবীণ শিল্পীরা এই কিংবদন্তি অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)