জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শুধু সোনা আর সোনা! সোনার হাত ধরেই এবার পশ্চিমবঙ্গের খনি শিল্পে বড়সড় এক পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (GSI)-র সমীক্ষায় রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় সোনা এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু খনিজ সম্পদের (Critical Minerals) সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় খনি মন্ত্রক (Union Ministry of Mines) নিশ্চিত করেছে, রাজ্যের অন্তত ন’টি জায়গায় সোনার মজুদ (Gold deposits) থাকার সম্ভাবনা! অবিশ্বাস্য নয়?

Add Zee News as a Preferred Source

আরও পড়ুন: Bengal Winter Update: মরসুমের শীতলতম দিন! ঘন কুয়াশা আর ক্রমহ্রাসমান উষ্ণতা-আবহে ঠকঠক করে কাঁপতে-কাঁপতেই কি বড়দিন?

বিরল সম্পদের খোঁজ

খনি মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে জোরদার অনুসন্ধানের ফলে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলিতে মূল্যবান ধাতু এবং রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস (REE)-এর মতো বিরল মানের সম্পদের হদিস মিলেছে। এই খনিজগুলি আধুনিক ইলেকট্রনিক্স, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি প্রযুক্তির জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য।

আর সোনা?

হ্যাঁ, সোনার সন্ধানও মিলেছে বইকি! বঙ্গে চিহ্নিত হয়েছে বেশ কয়েকটি সোনাসমৃদ্ধ অঞ্চল। এবং এর বেশিরভাগই বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ের (G4 বা G3 স্তর) অনুসন্ধানে রয়েছে। মূলত জঙ্গলমহল এলাকার পুরুলিয়া-বাঁকুড়া বেল্টেই এই অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে রুদ্র এলাকায় সোনা সমৃদ্ধ পাথরের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, খনিজ সমৃদ্ধ ঝাড়খণ্ড মালভূমির সঙ্গে ভৌগোলিক নৈকট্যের কারণেই এই পুরুলিয়া-বাঁকুড়া অঞ্চলে সোনার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস

সোনার পাশাপাশি পুরুলিয়া জেলায় বিরল খনিজ সম্পদের সন্ধানও মিলেছে। সেখানে বর্তমানে G2 স্তরের অনুসন্ধান চলছে এবং প্রায় ১৪ থেকে ১৭ ধরনের বিরল খনিজ উপাদান শনাক্ত করা হয়েছে। শুধুমাত্র পুরুলিয়ার কালপাথর-রঘুডি ব্লকেই প্রায় ০.৬৭ মিলিয়ন টন রেয়ার আর্থ এলিমেন্টের ভাণ্ডার রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সম্পদগুলি ইলেকট্রিক ভেহিকেল ব্যাটারি এবং প্রতিরক্ষা উৎপাদনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ২৮টি খনিজ অনুসন্ধান

২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ২৮টি খনিজ অনুসন্ধান প্রকল্প শুরু করেছে। ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া ছাড়াও দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের কিছু অংশে ম্যাঙ্গানিজ, টাংস্টেন, তামা এবং গ্রাফাইটের মতো সম্পদের সন্ধানে এই অভিযান চালানো হয়। পুরুলিয়ার চারটি অ্যাপাটাইট (ফসফেট) ব্লক পাংক্রিডিহ, পুরদহ, চিরুগোড়া এবং মেদনিটাঁড়– ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। এবং এগুলি নিলামের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক দাবি করেছে, ভারতের অন্যান্য রাজ্যে বেশ কিছু খনিজ ব্লক ইতিমধ্যে নিলাম করা হলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার নতুন চিহ্নিত এই সাইটগুলির অনেকগুলিতে এখনও নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করেনি।

সম্ভাব্য খনিজের পরিমাণ?

পুরুলিয়ার রুদ্র এলাকাকে বর্তমানে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া তাদের অনুসন্ধান চালিয়ে পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই পর্যায়ে মূলত মাটি এবং শিলাস্তরের নমুনা সংগ্রহ করা হয় যাতে সেখানে ড্রিলিং বা খনন কাজ করা সম্ভব কি না, তা যাচাই করা যায়। পশ্চিমবঙ্গে আনুমানিক ১২.৮৩ মিলিয়ন টন প্রাথমিক স্বর্ণ আকরিক রয়েছে, যার বেশিরভাগই পুরুলিয়া জেলায় অবস্থিত। 

আরও পড়ুন: Top Seven Coldest Villages: ‘অবিশ্বাস্য’ বললে কম বলা হয়! -৬৭ ডিগ্রির নীচে কাটাচ্ছে মানুষ! পৃথিবীর শীতলতম সাত গ্রাম, যেখানে…

৬৫০ কেজি খাঁটি সোনা!

এই আকরিক থেকে আনুমানিক ০.৬৫ টন (৬৫০ কেজি) খাঁটি সোনা পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কর্ণাটকের খনিগুলোর তুলনায় এখানকার সোনার মান কিছুটা ‘লো-গ্রেড’ (অপেক্ষাকৃত কম ঘনত্বের) হলেও, বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এটি বাণিজ্যিকভাবে যথেষ্ট লাভজনক ও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version