শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: SIR-এ পদবী-বিভ্রাট। বিপাকে খোদ রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্য়ায়। ছেলে সায়নদেবকে সার্টিফিকেট দেখাতে বললেন BLO।
রাজ্যে রাজনীতির পরিচিত মুখ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা, রাজ্যের মন্ত্রী। একুশের বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন তিনি। পরে উপনির্বাচনে ভবানীপুর থেকে লড়েন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। আর উত্তর ২৪ পরগনা থেকে জিতে বিধায়ক হন শোভনদেব। SIR-র সৌজন্য়ে সেই শোভনদেবই এখন পদবীহীন!
নজরে ছাব্বিশ। বাংলায় প্রথম পর্যায়ের SIR-র কাজ শেষ। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে দিয়েছে কমিশন। কিন্তু খসড়ায় তালিকায় নাকি চট্টোপাধ্যায় উধাও! ছেলের সায়নদেবের বাবা হিসেবে বাবা হিসেবে শুধুমাত্র শোভনদেবের নাম রয়েছে বলে অভিযোগ। তাহলে এবার হিয়ারিং যেতে হবে? সূত্রের খবর, সায়নদেবকে এখনও পর্যন্ত হিয়ারিংয়ে ডাকা হয়নি। তবে তাঁর মাধ্যমিকে অ্যাডমিট কার্ড দেখতে চেয়েছেন BLO। সঙ্গে নাম সংশোধনের পরামর্শও।
খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ৫৮ লক্ষ ভোটারের নাম। শুধু তাই নয়, ভোটারের নাম ‘মৃত’ তালিকায় ওঠা বা তথ্যে অসঙ্গতি থাকার মতো গুরুতর অভিযোগও সামনে এসেছে। যেমন, হুগলির ডানকুনিতে জীবিত তৃণমূল কাউন্সিলর এসআইআর খসড়া তালিকায় মৃত! খসড়া তালিকায় মৃত হিসেবে নাম রয়েছে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সূর্য দে’র।
খসড়া তালিকায় নিজের নাম মৃত হিসেবে দেখার পর, সোজা কালিপুর শ্মশানে হাজির তৃণমূল কাউন্সিলর। সঙ্গে ছিলেন তাঁর অনুগামীরা। কাউন্সিলের দাবি, ‘ইলেকশন কমিশন যখন আমাকে মৃত দেখিয়ে দিয়েছে, তখন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমার এসে আমার সৎকার করুন’। সেই ঘটনায় অবশ্য সংশ্লিষ্ট BLO-কে শোকজ করেছে কমিশন।
এদিকে দুর্গাপুরে ভোটাররা ‘নিখোঁজ’। সকলেই শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন পল্লী এলাকার বাসিন্দা। ৭০ নম্বর বুথের ১০ ‘নিখোঁজ’ ভোটারের দাবি, ‘আমরা ফর্ম জমা দিয়েছিলাম। আমাদের কাছে ফর্মে রিসিভ কপিও আছে। কিন্তু এখন লিস্টে লেখা রয়েছে খুঁজে পাওয়া যায়নি, অনুপস্থিত’। তাঁরা বলেন, ‘আমরা তো এই বিষয়টি দেখে বড় চিন্তায় রয়েছি। গাফিলতিটা কার বিএলও’র না নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের আমরা বুঝে উঠতে পারছি না’।
কমিশন সূত্রে খবর, ২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে SIR-র হিয়ারিং। ২০০২ ভোটার লিস্টে নাম নেই এরকম অনেকের নাম খসড়া তালিকায় আছে। অতিরিক্ত যাচাইয়ের জন্য তাদের অনেককেই কমিশন প্রয়োজনে ডাকতে পারে। সেক্ষেত্রে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রেসক্রাইব ১৩ টি নথির মধ্যে একটি দেখাতে হবে। আবার ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের কারও নামই যদি না থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে হিয়ারিংয়ের ডাকা হতে পারে। আধার ছাড়া বাকি ১২ টি নথির মধ্যে একটি দেখাতে হবে। তাহলেই নাম থাকবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায়। আবার ভুল তথ্য় দিলে বা বাবা-মায়ের বয়সের ব্যবধান ১৫ বছরের বেশি হলে কিংবা ভোটারের সঙ্গে অভিভাবকের বয়সের অযৌক্তিক গরমিলের (Logical discrepancy) মতো আর বেশ কয়েকটি হিয়ারিংয়ের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
