জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty) পরিচালিত আগামী ছবি ‘হোক কলরব’-এর টিজার (Hok Kolorob) মুক্তি পাওয়ার পরেই শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের (Saswata Chatterjee) একটি সংলাপ ঘিরে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ছবিতে শাশ্বত অভিনীত পুলিশ অফিসারের নাম এবং তাঁর বলা একটি বিশেষ ডায়লগ। ছবিতে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় একজন আইপিএস অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যাঁর নাম ‘ক্ষুদিরাম চাকী’। টিজারের একটি দৃশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “নমস্কার, আমি ক্ষুদিরাম চাকী। না, আমি ঝুলি না, ঝোলাই!”।
আরও পড়ুন- Priyanka Gandhi Son Engagement: রাজনীতি নয়, শিল্পেই মিলল মন! আংটি বদল করলেন প্রিয়াঙ্কাপুত্র রায়হান…
টিজার প্রকাশ্যে আসতেই নেটিজেন এবং ইতিহাসের অনুরাগী অনেকেরই দাবি, এই সংলাপের মাধ্যমে ভারতের অগ্নিযুগের দুই মহান বিপ্লবী— ক্ষুদিরাম বসু এবং প্রফুল্ল চাকী-কে ব্যঙ্গ বা অসম্মান করা হয়েছে। ক্ষুদিরাম বসু হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি গলায় তুলে নিয়েছিলেন, সেই আত্মত্যাগকে উল্লেখ করে একজন পুলিশ অফিসারের মুখে “আমি ঝুলি না, ঝোলাই” সংলাপটি অত্যন্ত কুরুচিকর বলে মনে করছেন সমালোচকরা। দুই বিপ্লবীর পদবী মিলিয়ে ‘ক্ষুদিরাম চাকী’ নাম রাখা এবং তারপর ফাঁসি সংক্রান্ত ডায়লগ দেওয়াকে “অবিবেচকের মতো কাজ” বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধিক্কার জানিয়েছেন একাংশ।
মঙ্গলবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার ছবির নাম ‘হোক কলরব’ যেটা ২৩শে জানুয়ারি ২০২৬-এ রিলিজ করবে। তার একটা টিজার রিলিজ করেছে যেখানে আমাদের প্রধান চরিত্র শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় একজন পুলিস অফিসার, তাঁর নাম হচ্ছে ক্ষুদিরাম চাকী। তাঁর মুখে একটা ডায়লগ আছে— ‘আমি ঝুলি না, ঝোলাই’। এটা নিয়েই কিছু মানুষ বিতর্ক শুরু করেছে। প্রথমদিন থেকে আমি ফলো করছিলাম, এটা বিজেপি আইটি সেলের কাজ। যারা ক্ষুদিরাম বসুর সঙ্গে বা প্রফুল্ল চাকীর সঙ্গে আমাদের ক্ষুদিরাম চাকী মানে প্রোটাগনিস্টকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, যাতে মনে হয় যে বাঙালি সেন্টিমেন্টে কোথাও আমি আঘাত করতে চেয়েছি”।
পরিচালক বলেন, “এটা ওদের প্রোপাগান্ডা। ক্ষুদিরাম চাকী বা ক্ষুদিরাম বোস এক নয়। মহাপুরুষরা মহাপুরুষের জায়গায়, আর তাঁদেরকে আমরা কখনোই ছোট করব না। যেমন নরেন্দ্রনাথ দত্ত আর নরেন্দ্র মোদী এক নয়, তেমনই ক্ষুদিরাম চাকী আর ক্ষুদিরাম বোস বা প্রফুল্ল চাকীকে আমরা কখনও এক করতে চাইনি। দয়া করে গুলিয়ে দেবেন না, এটা একটা চরিত্র। এ কেন এই ডায়লগটা বলেছে, যতক্ষণ না সিনেমাটা আসবে, টিজার দেখে সব কিছু বোঝা যায় না। প্লিজ এটা নিয়ে আপনারা কেউ বিচলিত হবেন না। বাঙালিরা জানে তাদের মহাপুরুষদের সম্মান করতে। এই বিজেপির থেকে আমরা অবশ্যই এটা শুনব না, তাদের আইটি সেল থেকে শুনব না, যারা বেসিক্যালি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিম দা’ বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙেন, যারা রবীন্দ্রনাথকে ছোট করেন— তাদের এই প্রোপাগান্ডায় পা দেবেন না। এদের কাজই হচ্ছে আইটি সেল থেকে মানুষকে বিচলিত করা। এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। সিনেমাটা বেরলে বুঝতে পারবেন এটা পুরো একটা অন্য পার্সপেক্টিভ থেকে অন্য ন্যারেটিভ। আর এই ন্যারেটিভটাকে পাল্টে দেওয়া হচ্ছে।”
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
