শিশুটির পরিবার ও হাসাপাতাল সূত্রে খবর, শাহবুলের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগণা (South 24 Parganas) জেলার হোগলায়। মঙ্গলবার আর্জেন্তিনার প্রথম ম্যাচ, সেই কারণে সোমবার বিকেলে বাঁশি কেনার বায়না করতে থাকে ওই খুদে। ছেলের আবদার মতো বাবা সইফুদ্দিন বাঁশি কিনেও দেয়। কিন্তু এরপর ঘটে বিপত্তি। বাজাতে গিয়ে অসাবধানতার বশে শাহবুলের গলার ভিতর ঢুকে শ্বাসনালীতে আটকে যায় বাঁশিটি। শ্বাসনালীতে বাঁশি আটকে থাকার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হল শিশুটির। এমনকী কাশলে মুখ থেকে বাঁশির শব্দ বেরোচ্ছিল। শ্বাসনালীতে বাঁশি ঢুকে যাওয়ার কথা জানতে পেরেই খুদের বাড়িতে ত্রাহি ত্রাহি রব ওঠে।
ছেলেকে নিয়ে তড়িঘড়ি কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন সইফুদ্দিন। প্রথমেই শাহবুলকে পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে (National Medical College) নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সারারাত সেখানেও থাকলেও বাঁশিটি বের করতে পারেননি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ENT বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটির সমস্যা বাড়তে পারে, এমনকী শ্বাসনালি থেকে রক্তক্ষরণ হওয়ার আশঙ্কা থেকেই তখন অস্ত্রোপচার করে বাঁশিটি বের করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। শেষমেশ বাঁশিটি বের করা গিয়েছে।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ENT বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হয় শিশুটির অপারেশন। হাসাপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্বাসনালিতে আটকে থাকার কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল শাহবুলের। রিজিড ব্রঙ্কোস্কপি পদ্ধতির মাধ্যমে বাঁশিটি বের করা হয়েছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ডাঃ দীপ্তাংশ মুখোপাধ্যায় ‘এই সময় ডিজিটাল’-কে বলেন, “এই পদ্ধতিতে শ্বাসনালিতে আটকে থাকা কোনও কিছু বের করার হয়। অ্যানাসথেসিস্টরা রোগীকে অজ্ঞান করার পর ENT চিকিৎসকরা ব্রঙ্কোস্কোপ ঢুকিয়ে আটকে থাকা বস্তুটির অবস্থান দেখে এবং ফরসেপ দিয়ে সেটি টেনে বের করা হয়। এই পদ্ধতি রোগী বিশেষে সময়সাপেক্ষও হতে পারে, এমনকী রক্তক্ষরণ, রোগী মৃত্যুর সম্ভাবনাও থাকে। সৌভাগ্যবশত এই শিশুটির ক্ষেত্রে খুব অল্প সময়ে আমরা সফল হয়েছি।”