Shakib Khan, Bubly, Apu Biswas, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অপুর কথা কখনও শাকিব বলেওনি, এমনকী যখন তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়েছে যে সময়, সেই সময় শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের জীবনেও ছিলেন না তিনি, সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় জীবনের বেশ কিছু ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন শাকিব খানের স্ত্রী শবনম বুবলী। ২০১৮ সালের ২০ জুলাই বিয়ে করেছিলেন শাকিব খান ও বুবলী। এরপর ২০২০ সালের ২১ মার্চ তাদের সংসারে জন্ম নেয় শেহজাদ খান বীর। তবে তিন বছর ছেলের কথা প্রকাশ্যে আনেননি এই দম্পতি। কিছুদিন আগেই বুবলী প্রকাশ্যে এনেছেন তাঁর ও শাকিব খানের ছেলের কথা। এরপরই তাঁরা দুজনেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। সম্প্রতি প্রায় ৪২ মিনিটের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন অভিনেত্রী। সেই ভিডিয়োতেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বেশ কয়েকটি অভিযোগের জবাব দিয়েছেন অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন-FIFA World Cup 2022 Deepika Padukone: কাতারে সুন্দর-কাণ্ড! কাপ হাতে তুলে রেকর্ড গড়বেন দীপিকা…
কেরিয়ারের প্রথমদিকের কথা টেনে বুবলী বলেন, ‘আমি ২০১৬ থেকে কাজ করছি। শাকিব খান, যিনি আমার সন্তানের বাবা, আমার স্বামী, তাঁর সঙ্গে আমি কাজ শুরু করি বা সুযোগ পাই। উনি আমাকে মেন্টর হিসেবে গাইড করতেন। ওঁর মাধ্যমেই আমার ফিল্মে আসা। ওই সময়ে আমি কেন, পুরো বাংলাদেশের কেউ কি জানতেন ওঁর আগের কোনও সম্পর্ক নিয়ে? এটা কিন্তু আমরা কেউই জানতাম না। উনি নিজেকে আমার কাছে সিঙ্গেলই বলেছিলেন। সেই সুবাদেই আমাদের মধ্যে ভালোলাগা তৈরি হয়।’ বুবলীর দাবি এরপর যখন অপু বিশ্বাস একটি টক শোয়ে এসে তাঁর ও শাকিবের বিয়ে ও সন্তানের কথা প্রকাশ্যে আনেন, তখন অভিযোগের আঙুল ওঠে বুবলীর দিকেই। বুবলী বলেন, ‘অপু বিশ্বাস, উনি অনেক সিনিয়র আমার থেকে। তাঁকে অবশ্যই আমি কাজের জায়গা থেকে সম্মান করি। তাঁর সঙ্গে কখনই আমার সামনাসামনি দেখা হয়নি। ২০১৭ সালে তিনি লাইভে আসার আগে হঠাৎ আমাকে ফোন করেছিলেন এবং অনেক বাজে ব্যবহার করেছিলেন। আমি বুঝতে পারিনি কেন! ওই ব্যবহারের জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। ওই বাজে ব্যবহারের কথা তিনি নিজেও পরবর্তীতে স্বীকার করেছিলেন।’
বুবলীর দাবি, “আমি শাকিব খানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, পরে তিনি অনেক ইমোশনালি বলেন যে, ‘অনেক দিন ধরেই কথাগুলো তোমাকে বলতে চাইছিলাম। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে এক বছর ধরে আমার যোগাযোগ নেই।’ এটা অপুদি নিজেও লাইভ প্রোগ্রামে বলেছিলেন। আপনারা অনেকেই জানেন, শাকিব খানের কথা অনুযায়ী অপু বিশ্বাসকে তিনবার অ্যাবরশন করতে হয়েছিল। চতুর্থবার বাধ্য হয়েই তিনি সন্তান নিয়েছিলেন। এইসব ঘটনায় তো আমি নেই। তখন সিনেমাতেই আমার অস্তিত্ব নেই। কেন আমাকে দোষারোপ করা হল যে, আমার কারণে তাঁদের সংসার ভেঙেছে? আমার কারণে কারও সংসার, সম্পর্ক ভাঙেনি। আমি স্পষ্ট করে দর্শকের উদ্দেশে বলতে চাই। শাকিব খান নিজেই আমাকে বলেছেন, তিনি এই সম্পর্কে (অপু বিশ্বাসের সঙ্গে) সুখী নন। তিনি তার জায়গা থেকে আমাকে অনেক কিছুই বলেছেন। যেটা আমি তার সম্মানার্থে আগেও বলিনি, আজও বলবো না। এটুকু বলি, আমি তো অনেক পরে এসেছি, তাদের সমস্যাগুলো তো অনেক আগে থেকেই।”
আরও পড়ুন-Hera Pheri 3: অক্ষয় রাজ! ‘হেরা ফেরি’-র তৃতীয় ইনস্টলমেন্টে ফের একসঙ্গে রাজু-শ্য়াম-বাবুরাও
এরপর আরেকটি অভিযোগের বিরুদ্ধে বুবলী বলেন, ‘অনেকে বলে থাকেন, আমি নাকি শাকিব খানের কাছ থেকে অনেক আর্থিক সহায়তা নিই। এই কথাটাও সম্পূর্ণ ভুল। বিয়ে বা আমার সন্তান পৃথিবীতে আসার পর থেকে আমি কোনও আর্থিক সহায়তা নিইনি। স্বামী বা সন্তানের বাবা হিসেবে অবশ্যই এটা ওঁর অনেক বড় দায়িত্ব। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ তার ওপর নির্ভর করে। আমার সন্তানের বয়স তিন বছরের কাছাকাছি, আজ অব্দি আমি কখনোই আর্থিক সহায়তা নিইনি। সমস্ত কিছু নিজেই বহন করছি। সন্তানকে নিয়ে আমেরিকায় থাকাকালীন অনেক টাকা খরচ হয়েছিল। ওই সময়ে ১৫ হাজার ডলার দিয়েছিলেন শাকিব। আমি দিয়েছিলাম ৩০ হাজার ডলার। টাকার অংকটাও বললাম, কারণ এটা নিয়ে অনেক ভুল নিউজ হয়েছে। গিফট বা উপহারের বিষয়গুলো আলাদা। তবে আর্থিক সহায়তা কখনও নিইনি।’
কয়েকদিন আগে বুবলী জানান, তার জন্মদিনে শাকিব খান হীরের নাকফুল উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু শাকিব বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বুবলী বললেন, ‘নাকফুলের বিষয়টি নিয়ে অনেকে জানতে চাইছিলেন। দেখুন কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে কিছু উপহার দেন, সেই বিষয়টা যদি প্রমাণ করতে হয়, তা হলে এটা নিয়ে কথা বলাই উচিত না। উনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার পরও যদি কিছু প্রমাণ করতে যাই, তাহলে তাঁকে অসম্মান করা হবে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে আমি আর কোনও কথা বলতে চাইছি না। উনি যেটা ভালো মনে করেছেন, বলেছেন।’সবশেষে ছেলে শেহজাদ খান বীরকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন বুবলী। তিনি বলেন, “আমি চেয়েছিলাম ওর বিষয়টা একসঙ্গে সুন্দরভাবে সামনে আনতে। কিন্তু কোনওভাবে হচ্ছিল না। আমি তো প্রায় তিন বছর অপেক্ষা করেছি। ওর বিষয়টা সামনে আনার পর থেকে আমি কারও বিষয়ে কোনো অভিযোগ করিনি। এবং আজও করছি না।’
ছেলে শেহজাদের উদ্দেশে কাঁদতে কাঁদতে বুবলী বললেন, “বাবা শেহজাদ, মা হয়ত সারাজীবন তোমার পাশে থাকবো না। কিন্তু অন্যান্য মায়ের মতো আমিও তোমার জন্য অনেক কষ্ট করেছি বা করছি। তোমাকে পৃথিবীতে আনা, বড় করা। আমি সবসময় তোমার পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। তুমি মানুষের মতো মানুষ হবে। একটি কথা মনে রেখো, তোমার মা-বাবা তোমাকে খুব ভালোবাসে। আমি হয়ত আমার জায়গা থেকে তোমার জন্য সেরাটা দিতে পারি না। কিন্তু আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি বাবা।”