এই সময়: ৩১ মার্চের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (Pradhan Mantri Awas Yojana) ১০ লক্ষ ১৯ হাজার ৭৯৫টি বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে হবে বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সোমবার জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি জানান, বাড়ি তৈরির কাজ ফেলে রাখা যাবে না। কাজ কী ভাবে দ্রুত করতে হবে, তার রূপরেখা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেন মুখ্যসচিব। বৈঠকে জানানো হয়, আরও ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৯৩ জন উপভোক্তার নাম শীঘ্রই চূড়ান্ত করতে হবে। কারণ রাজ্যের কোটা রয়েছে ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮-র। এরই মধ্যে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ দিন আবাস যোজনায় বঞ্চিতদের নিয়ে জনস্বার্থ মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ দিন ভগবানপুরের সভায় তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের তালিকা কে তৈরি করেছে? তৃণমূল তৈরি করেছে। টাকা নিয়ে তৈরি করেছে। তৃণমূলের কাকা, জ্যাঠা, ভাইপো, আত্মীয়স্বজনদের নাম তালিকায় থাকলেও প্রকৃত গরিব মানুষের নাম নেই।’

Pradhan Mantri Awas Yojana : আবাস তালিকার ৮৪% ভরতে হবে বাইশের বাকি ৩ দিনে
যদিও রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কারও নাম না-করে বলেন, তালিকায় গরমিলের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘সেই সময়ে পূর্ব মেদিনীপুরে কে দায়িত্বে ছিলেন? নাম বললাম না।’ শুভেন্দুর এ দিনের বক্তব্যের পাল্টা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা ভুলে গিয়েছেন, ওই সময়ে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও মন্ত্রী ছিলেন। তিনি এখন দলবদল করে নিজেই স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন।’ তাঁর সংযোজন, ‘ওঁর কাজই হলো, মানুষকে বিভ্রান্ত করা। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকানো। স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির কাজ করছে প্রশাসন।’

Pradhan Mantri Awas Yojana : ‘টাকা এলে ভাগ তুমিও পাও…’, বিক্ষোভের মুখে পড়ে চাঞ্চল্যকর দাবি তৃণমূল নেতার, ভাইরাল ভিডিয়ো
মুখ্যসচিব এ দিন বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই উপভোক্তাদের নিয়ে বৈঠক করতে হবে। তাঁদের একদিনের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বাড়ি তৈরিতে ইট-সহ অন্যান্য কাঁচা মাল কোথা থেকে জোগাড় করতে হবে, তা চূড়ান্ত করে দিতে হবে গ্রাম পঞ্চায়েত ও প্রশাসনকে। চালু করতে হবে কন্ট্রোল রুম বা হেল্পলাইন, যা উপভোক্তাদের সহায়ক হবে। অনুমোদনের দিন থেকে ৪০ দিনের মধ্যে বাড়ির জানলা পর্যন্ত গাঁথনি তুলে ফেলতে হবে। তার আরও ৩৫ দিনের মধ্যে লিন্টেল পর্যন্ত গাঁথনি সারতে হবে উপভোক্তাদের। এর ১৫ দিন পর বাড়ির কাজ ভেরিফিকেশনের জন্য যাবে সরকারি টিম। বৈঠকে জেলাভিত্তিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরির টার্গেট পূরণেরও নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব।

Pradhan Mantri Awas Yojana : আবাস যোজনা: নির্মাণে অনুমতি পেলেন ১০ লাখ
এ সবের মধ্যেই বীরভূমের পাড়ুই থানার সাত্তোরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আনোয়ার সিকদারের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রে অবস্থিত এই সাত্তোর। ভিডিয়োতে কারও উদ্দেশে আনোয়ারকে বলতে দেখা যায় – এই রকম কথা বলবে না৷ টাকা সবাই পায়৷ ১০ হাজার টাকা এলে সবাই সমান ভাগ পায়৷ তুমিও পাও, বাকিরাও পায়। ভিডিয়োটির সত্যতা ‘এই সময়’ যাচাই করেনি। ফুটেজে বলা ‘১০ হাজার টাকা পেলে সবাই ভাগ পায়’ কথাটা যে ঠিক, তা এ দিন মেনে নিয়েছেন আনোয়ার। তাঁর সাফাই, ‘দলীয় কর্মীরা বেকার। তাই কোনও জায়গা থেকে টাকা এলে ওদের তেল খরচের জন্য দিই। যারা ন্যায্য প্রাপক, তারা অনেকেই বাড়ি পায়নি৷ আমরা বিডিওকে সেই তালিকা দিয়েছি৷ উনি খতিয়ে দেখে তাদের আবাস যোজনার বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’ এ দিনই আবাস-বিতর্কে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বুদবুদ থানার অধীন চাকতেঁতুল পঞ্চায়েত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামের গরিব মানুষ ঘর পাননি। যাঁদের দোতলা বাড়ি, পরিবারে একাধিক সরকারি কর্মী, তাঁদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version