যদিও রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কারও নাম না-করে বলেন, তালিকায় গরমিলের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘সেই সময়ে পূর্ব মেদিনীপুরে কে দায়িত্বে ছিলেন? নাম বললাম না।’ শুভেন্দুর এ দিনের বক্তব্যের পাল্টা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা ভুলে গিয়েছেন, ওই সময়ে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও মন্ত্রী ছিলেন। তিনি এখন দলবদল করে নিজেই স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন।’ তাঁর সংযোজন, ‘ওঁর কাজই হলো, মানুষকে বিভ্রান্ত করা। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকানো। স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির কাজ করছে প্রশাসন।’
মুখ্যসচিব এ দিন বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই উপভোক্তাদের নিয়ে বৈঠক করতে হবে। তাঁদের একদিনের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বাড়ি তৈরিতে ইট-সহ অন্যান্য কাঁচা মাল কোথা থেকে জোগাড় করতে হবে, তা চূড়ান্ত করে দিতে হবে গ্রাম পঞ্চায়েত ও প্রশাসনকে। চালু করতে হবে কন্ট্রোল রুম বা হেল্পলাইন, যা উপভোক্তাদের সহায়ক হবে। অনুমোদনের দিন থেকে ৪০ দিনের মধ্যে বাড়ির জানলা পর্যন্ত গাঁথনি তুলে ফেলতে হবে। তার আরও ৩৫ দিনের মধ্যে লিন্টেল পর্যন্ত গাঁথনি সারতে হবে উপভোক্তাদের। এর ১৫ দিন পর বাড়ির কাজ ভেরিফিকেশনের জন্য যাবে সরকারি টিম। বৈঠকে জেলাভিত্তিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরির টার্গেট পূরণেরও নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব।
এ সবের মধ্যেই বীরভূমের পাড়ুই থানার সাত্তোরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আনোয়ার সিকদারের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রে অবস্থিত এই সাত্তোর। ভিডিয়োতে কারও উদ্দেশে আনোয়ারকে বলতে দেখা যায় – এই রকম কথা বলবে না৷ টাকা সবাই পায়৷ ১০ হাজার টাকা এলে সবাই সমান ভাগ পায়৷ তুমিও পাও, বাকিরাও পায়। ভিডিয়োটির সত্যতা ‘এই সময়’ যাচাই করেনি। ফুটেজে বলা ‘১০ হাজার টাকা পেলে সবাই ভাগ পায়’ কথাটা যে ঠিক, তা এ দিন মেনে নিয়েছেন আনোয়ার। তাঁর সাফাই, ‘দলীয় কর্মীরা বেকার। তাই কোনও জায়গা থেকে টাকা এলে ওদের তেল খরচের জন্য দিই। যারা ন্যায্য প্রাপক, তারা অনেকেই বাড়ি পায়নি৷ আমরা বিডিওকে সেই তালিকা দিয়েছি৷ উনি খতিয়ে দেখে তাদের আবাস যোজনার বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’ এ দিনই আবাস-বিতর্কে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বুদবুদ থানার অধীন চাকতেঁতুল পঞ্চায়েত ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামের গরিব মানুষ ঘর পাননি। যাঁদের দোতলা বাড়ি, পরিবারে একাধিক সরকারি কর্মী, তাঁদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে।