এদিন তিনি জানান, “মেচুয়ার জঙ্গলের ধার দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকা বাঘ হামলা চালায়। নৌকার মাথায় পাটাতনের উপর বসেছিলেন বাসুদেব। বাঘ তাঁকে নিয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমরা বাকিরা বুঝতে পেরে লাঠি নিয়ে তাড়া করে কোনওরকমে বাসুদেবকে বাঘের মুখ থেকে কেড়ে আনি। যদিও শেষ রক্ষা করা যায়নি।”
মেচুয়ার যে জঙ্গলে বাঘ হামলা চালায়, সেই এলাকা সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের (Sundarban Tiger Reserve Forest) মধ্যে পড়ে। এই বিষয়ে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের (Sundarban Tiger Reserve Forest) AFD সৌমেন মন্ডল বলেন, “এখানে কাউকেই যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি এবং এই হামলার ঘটনায় আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য নেই। তথ্য আসার পরেই আমরা এই বিষয়ে বিশদে জানাতে পারব।” এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হালিম নস্কর বলেন, “আয়লা, আমফান, যশের মত ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে চাষবাস ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এখন সুন্দরবনের মানুষের জীবন জীবিকা জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরার উপরেই নির্ভর করে। প্রানের ঝুঁকি থাকলেও তা নিয়েই গভীর জঙ্গলে যেতে হয় মাছ বা কাঁকড়া ধরতে।” এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বাসুদেব বৈদ্যর স্ত্রী ভানুমতী বৈদ্য সহ ভেঙে পড়েছে তাঁর পুরো পরিবার।
প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের জঙ্গল লাগোয়া খাঁড়িতে মাছ বা কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মৎস্যজীবীদের বাঘের হামলার মুখে পড়ার ঘটনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। তবে ইদানিংকালে বাঘের হামলায় মৎস্যজীবীদের প্রাণ যাওয়ার ঘটনার কথা প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। কয়েকমাস আগেই একইভাবে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় প্রাণ গিয়েছিল কুলতলির এক বাসিন্দার। নিয়ম বহির্ভূতভাবে গভীর জঙ্গলে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্যই ইদানিংকালে বাঘের হামলায় মৎস্যজীবীদের মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে বলে বন দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন।