WBSC Result : বাবা পেশায় হকার। গৃহবধূ মা শিক্ষার আঙিনায় কখনও পা রাখেননি। টালির চালের বাড়িতে হারিকেনের আলোয় লেখাপড়া করে আজ লাইম লাইটে সাগরদিঘির মিজানুর রহমান। WBCS-এর জেনারেল ক্যাটাগরিরে ১৯ র‌্যাঙ্ক করেছেন তিনি। একইসঙ্গে বি গ্রেডের পুলিশ সার্ভিস ক্যাটাগরিতে ছয় র‍্যাঙ্ক করে জেলার মানুষের নজর কেড়েছে মিজানুর রহমান। শীঘ্রই সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে চলেছেন সাগরদিঘি ব্লকের ফুলশহরির এই কৃতী। মিজানুর রহমান বলেন, “বাবার কাছে লেখাপড়ার জন্য যা চেয়েছি তিনি কষ্ট করে হলেও আমাকে দিয়েছেন। ফলে পড়াশোনা চালাতে সেভাবে কোনও কষ্ট হয়নি। তবে WBCS-এর জন্য আলাদা করে কোনও কোচিং নিইনি। আমাদের আর্থিক সামর্থ্যও ছিল না। ধৈর্য্য ধরে স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়েছি। আজ এই সাফল্যে অত্যন্ত খুশি।” মিজানুরের বাবা তোফজুল ইসলাম বাঁকুড়ায় হকারি করে সংসার চালান। দুই ছেলে তিন মেয়েকে সামলাতেন মা আসিয়া বিবি। তিনি জানান, মাসের শেষে সমস্ত উপার্জন তিনি স্ত্রীর হাতে তুলে দিতেন। এদিকে তাঁর স্ত্রী আসিয়া বিবি নিজে কখনও পড়াশোনা করেননি। কিন্তু, সন্তানদের পড়াশোনা করার জন্য সবসময় উৎসাহিত করতেন। পরিবারের পাঁচ ছেলে মেয়ের মধ্যে মিজনুর বড়। ছোট থেকেই মেধাবী তিনি। বড় হয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোই তাঁর স্বপ্ন ছিল।

West Bengal Latest News : বাংলা মাধ্যমে পড়েই বাজিমাত, বিশ্বদরবারে স্বীকৃতি প্রাক্তন মন্ত্রীর কন্যা কোয়েনার
২০১০ সালে সাগরদিঘি থানার শেখদিঘি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮০.৬ শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিকের গন্ডি পার হয়েছিলেন মিজানুর। এরপর তিনি ভর্তি হন আল আমিন মিশনে। ২০১২ সালে আল আমিন মিশন থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৮২ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর ফিজিক্স অনার্স নিয়ে তিনি স্নাতক হন । ২০১৬ সালে ৬৬ শতাংশ নম্বর নিয়ে BSC পাশ করেন মিজানুর। এরপরেই শুরু হয় নয়া লড়াই।

Malda News: গবেষণার জন্য বিদেশে পাড়ি মালদার স্বর্ণায়ুর, সাফল্য নিয়ে মুখ খুললেন তরুণ
WBCS পাশ করার জন্য লড়াই চালিয়ে যান তিনি। টালির চালের বাড়িতে হারিকেনের আলোয় পড়াশোনা করেছেন। চারিদিকে যখন কোচিং ক্লাসের রমরমা সেই সময় নিজে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন মিজানুর। জেনারেল ক্যাটাগরিতে ১৯ নম্বর র‍্যাঙ্ক দেখেই উচ্ছাসে মাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন এই যুবক। ঝড়ের বেগে হকার পুত্রের সাফল্যের খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। রাত থেকে বাড়িতে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য উপচে পড়া ভিড়। বাবা তোফজুল ইসলাম বলেন, “ছোট থেকেই ও সাফল্যের স্বপ্ন দেখত। ওর এই কৃতিত্বে আমি অত্যন্ত খুশি।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version